ককটেল বিস্ফোরণ-হাতাহাতি, পণ্ড ছাত্রলীগের সম্মেলন

0
566

খবর৭১: দলীয় অন্তঃকোন্দলের রেশ, ককটেল বিস্ফোরণ আর বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও হাতাহাতিতে ভন্ডুল হয়ে গেছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন। দীর্ঘ নয় বছর পর আজ মঙ্গলবার নগরীর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে বেলা ১১টার দিকে এ সম্মেলন শুরু হয়। কিন্তু সম্মেলনের শুরুর দিকেই সংগঠনটির বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ির মতো ঘটনা ঘটলে তা ভন্ডুল হয়ে যায়। পাশাপাশি সম্মেলনকক্ষের পেছনের দিকে একটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়।

বেলা ১১টার পরপরই মঞ্চে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে আসেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। এ সময় সম্মেলনকক্ষের পেছনের দিকে বসা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা চট্টগ্রাম নগরীর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার নাম উল্লেখ করে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে জাকির হোসাইন তাঁদের স্লোগান দিতে বারণ করে বলেন, শেখ হাসিনা আর বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কারও নামে স্লোগান দেওয়া যাবে না। কিন্তু স্লোগানদাতারা তাঁর কথায় কোনো কর্ণপাত করেননি। পরে তিনি অসমাপ্ত রেখেই বক্তব্য শেষ করেন।

জাকির হোসেনের পর বক্তব্য দিতে মঞ্চে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাকিব হোসেন। তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই সম্মেলনকক্ষের পেছনের দিকে স্লোগানের পাশাপাশি শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি। মঞ্চে উপস্থিত অন্য অতিথিদের নিষেধ সত্ত্বেও এই সাংঘর্ষিক অবস্থা চলতে থাকে। এ সময় কক্ষের পেছনের দিকে একটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বিস্ফোরণে শব্দে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সবাই সম্মেলনকক্ষ থেকে দৌড়ে বাইরে চলে যান। এ অবস্থার মধ্যেই দুপুর ১২টার দিকে সম্মেলনে আসা অতিথিরা সম্মেলনস্থল ত্যাগ করেন। পরে পুলিশ এসে সবাইকে সম্মেলনকক্ষের বাইরে বের করে দেয়। ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের বাইরে এখনো দফায় দফায় বিভিন্ন গ্রুপ স্লোগান দিয়ে যাচ্ছে। ফলে দুপুরের পর অনুষ্ঠেয় কাউন্সিল পর্ব হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন শুরুর পর বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়া ছুড়ি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন শুরুর পর বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এ সম্মেলন প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ। এ ছাড়া অতিথিদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী, রাউজানের সাংসদ এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীসহ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা ছিলেন।

দীর্ঘ নয় বছর পর ছাত্রলীগের এ কমিটি হওয়া নিয়ে কয়েক দিন ধরেই ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ উত্তেজনাকর পরিবেশ লক্ষ করা গেছে। এর মূল কারণ হলো কোন দুজন হচ্ছেন নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। জেলা আওয়ামী লীগসহ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই চাচ্ছেন তাঁদের সমর্থিত ব্যক্তি নেতৃত্বে আসুক। এ জন্য ৬০ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাইও করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। আজ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের নয়টি ইউনিটের মোট ৩৬৬ জন কাউন্সিলরের ভোটে নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার কথা ছিল। তবে এ উত্তেজনাকর পরিবেশের কারণে আজ তা হচ্ছে কি না, তা বোঝা যাচ্ছে না।

সম্মেলনে চেয়ার ছোড়াছুড়ি সময় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন হাতজোড় করে সবাইকে শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। দুপুর ১২টা ১৫মিনিট। ছবি: জুয়েল শীল
সম্মেলনে চেয়ার ছোড়াছুড়ি সময় গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন হাতজোড় করে সবাইকে শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট।
এ ব্যাপারে উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব চৌধুরী বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে সম্মেলন হচ্ছিল । বক্তারা যখন জামাত–শিবিরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন পেছন থেকে ককটেল হামলা হয়। এ বিশৃঙ্খলার জন্য জামাত–শিবির দায়ী। দুপুরের পর যথারীতি সম্মেলনে দ্বিতীয় অংশ শুরু হবে। কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বাছাই করা হবে।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here