খবর৭১: ২০১৭ সালে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী বিরোধী দলীয়দের টার্গেটে নিয়ে নিয়মিত গুমের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
সংস্থাটির বার্ষিক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর গুমের শিকার ৮০ জনের বেশি মানুষের কোনো খোঁজ এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া অধিকার কর্মীদেরও ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে অভিযোগ অ্যামনেস্টির।
লন্ডনভিত্তিক সংস্থাটির ওই প্রতিবেদন মতে, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার ও মত প্রকাশের অধিকার দমনে বাংলাদেশে নিপীড়নমূলক আইন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ে অ্যামনেস্টির ভাষ্য, ‘প্রধানত বিরোধীদের টার্গেট করে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নিয়মিত গুমের ঘটনা ঘটছে। গুমের শিকার অনেককেই পরে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।’
অবশ্য এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘গুমের ঘটনা তদন্তে নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। অনেককে পাওয়া গেছে, যারা সরকারকে বিব্রত করতে নিজেরাই লুকিয়ে থেকেছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এগুলো পুরনো মন্তব্য। এসব সত্য নয়। আমরা প্রতিটি অপহরণের ঘটনাই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।’ এদিকে গুমের সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছেন অধিকার কর্মীরা।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আমরা মানবাধিকার কর্মীরা গুমের ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক করেছি। কিন্তু সরকার আমাদের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে না। গুম সমাজে একটি ভীতিকর অবস্থা তৈরি করেছে।’
এক মাস আগে বাংলাদেশ সম্পর্কে একই অভিযোগ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এতে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বাংলাদেশের নিন্দা করা হয়।
১৯৬১ সালে প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন থেকে ১৫৯ দেশের মানবাধিকার প্রতিবেদন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে অ্যামনেস্টি। এতে বাংলাদেশে ২০১৭ সালে ৮০টি গুমের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে গত মার্চে গুমের শিকার হুম্মাম কাদের চৌধুরীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া বিএনপির সাবেক নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধারীর ছেলে। ছয় মাস পর আটাবস্থা থেকে মুক্তি দেয়া হয় হুম্মামকে।
এছাড়া ২০১৬ সালে গুমের শিকার হন আহমাদ বিন কাসেম ও আবদুল্লাহিল আমান আজমী। তারা দুইজন যথাক্রমে যুদ্ধাপরাধাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী ও দলটির সাবেক আমীর গোলাম আযমের ছেলে।
খবর৭১/জি: