এখন আর লোকায়ত বাংলার অমর সংগীত ঢেঁকির শব্দে ঘুম ভাঙ্গেনা নড়াইলের মানুষের

0
538

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
ঢেঁকির শব্দে এখন আর নড়াইল জেলা-উপজেলার মানুষের ঘুম ভাঙ্গেনা। লোকায়ত বাংলার অমর সংগীত “বউ ধান ভানেরে ঢেঁকিতে পার দিয়া, আমি নাঁচি ঢেঁকি নাঁচে হেলিয়া দুলিয়া”-এ গানের শুরের মত আমাদের গ্রাম বাংলা থেকে ঢেঁকি হারিয়ে গেছে। ধান ভানা, চিড়াকুটা, পিঠা তৈরীর চাল কুটার জন্য এক সময়কার জনপ্রিয় এ যন্ত্রটি আমাদের জীবনের প্রয়োজনীয়তার গন্ডি ডিঙ্গিয়ে সভ্যতার নতুন নতুন আবিস্কারের যান্ত্রিক অগ্রগতির প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে যাদু ঘরে আশ্রয় নিয়েছে।। বিস্তারিত আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, ঢঁকি আমাদের জীবনের প্রয়োজনীয় অতি গুরুত্বপূর্ন একটি যন্ত্র হিসেবে দীর্ঘ দিন গ্রাম বাংলায় তার আধিপত্য বিস্তার করেছিল। এমন কোন গ্রাম ছিলনা যে গ্রামের বাড়ীতে একটি ঢেঁকি ছিলনা। ঢেঁকিতে ধান পার দিয়ে চাল ছাড়াতেন। বড় গৃহস্তদের বার্ষিক ধান ভানার জন্য থাকতো ভানারী তারা নির্দিষ্ট চাল পারিশ্রমিক নিয়ে ধান পার দিয়ে চাল করে দিতেন। আজ তা সবই অতীত স্মৃতি রূপ কথার গল্প। এক বাড়ীতেই ২০ টি ঢেঁকি একসময় ছিল বলে নড়াইলে গ্রাম বাসি জানায়। আজকাল মুগবুল মেস্তেরি বাড়ী দূরের কথা হাতকান্দি পৌর এলাকায়ও ২০ ঢেঁকির অস্থিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়না। ামার দাদীর মুখে শুনে ছিলাম মানুষের অসুখ হলে ঢেঁকি ছাঁটা চাউলের ভাত খাওয়া জন্য চিকিৎসক পরামশ্র্ দিতেন। এখন পিঠা তৈরীর জন চাল গুড়া করতে হলেও ঢেঁকি খোঁজেনা কেউ। সবাই ছুটেন যন্ত্র চালিত চালকল বা আটার হলারের নিকট। আমাদের জীবনের প্রয়োজনে একদিন ঢেঁকির আবিস্কার হয়েছিল। আজ আবার নতুন নতুন আবিস্কারের প্রতিযোগিতায় নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তারপরও মীরসরাই উপজেলার অনেক কৃষক পরিবার ঢেঁকিকে এখনও টিকিয়ে রাখার জন্য প্রানান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আক্তার ও তার ২ মেয়ে তারিন আক্তার ও সারমিন আক্তার এখন ঢেঁকি দিয়ে ধান ভানে। তারা বলেন, নড়াইল জেলা উপজেলাতে আগে প্রতি ঘরে ঘরে ঢেঁকি দিয়ে ধান ভানতো। এখন মেশিন দিয়ে ধান ভানে। এতে ব্যয় একটু বেশি হলেও সময় বাঁচে। ঢেঁকি দিয়ে ধান ভানার সম্পর্কে তারা বলেন, ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনো ঢেঁকি দিয়ে ধান ভানেই করছি আমরা। নড়াইলের এলাকার আরেক গৃহিনি আকলিমা সুলতানা জানান, আমি এখন ও আমাদের পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রেখে ঢেঁকি দিয়ে ধান ভানেই করি। আগে আমার দাদীরা করতো তার পর আমার মা’রা করত এখন আমি করি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here