২০১৪ আর ২০১৮ এক নয়: মোশাররফ

0
336

খবর ৭১:বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন আর হতে দেয়া যাবে না। এর জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা সবাই প্রস্তুত রয়েছেন। যেকোন মূল্যে বর্তমান সরকারের এই ষড়যন্ত্র রুখতে হবে।

তিনি বলেন, ২০১৪ আর ২০১৮ এক নয়। এটা হাসিনা সরকারের মাথায় রাখা উচিত। এই নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের আওতায় অনুষ্ঠিত হতে হবে।

বুধবার দুপুরে বরিশাল নগরীর অশ্বিনী কুমার হলে আয়োজিত মহানগর বিএনপির কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি আরো বলেন, পাকিস্তান আমল থেকে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এমন কোন মামলা নেই যাতে এক সপ্তাহে আদালতে তিনবার হাজির হতে হয়।কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যে প্রণোদিত মামলা করে তাকে বারবার আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। এই মামলায় যদি বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হয়ে যায় তাহলে জনগণ বুঝে নেবে এই বিচার কার্যক্রমের পিছনে কোন অশুভ শক্তির হাত রয়েছে। আর আমরাও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব। আর এই মামলা মিথ্যা হওয়ার কারণে সেটা এখনো প্রমাণ করতে পারেনি। আর সাক্ষীরাও কিছু বলতে পারছে না যে খালেদা জিয়া এই মামলার সাথে সম্পৃক্ত কিনা।

মোশাররফ বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলাসহ ১৫টি মামলা চলমান ছিল। যা ক্ষমতায় আসার পর হাইকোর্ট থেকে মামলা গুলো থেকে খারিজ পান তিনি। আর অন্যদিকে সারা বাংলাদেশে আমাদের শীর্ষস্থানীয় নেতা থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীরা আদালতে যেতে যেতে ক্লান্ত। আ’ লীগ ক্ষমতায় আসার পর সাড়ে ৭ হাজার মামলা খারিজ করেছে আদালত থেকে, আর বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

তিনি বলেন, এই দেশের মানুষ যখন সুযোগ পেয়েছে তখন বিএনপিকে ভোট দিয়েছে। এই কারণে ষড়যন্ত্রকারীরা বেগম খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। আর এই ভয়েই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটার পর একটা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে বিএনপিকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হয়েছিল সে সময়, আর এখন চেষ্টা করা হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের গুম,খুন করে দুর্বল করার।

খন্দকার মোশাররফ আরো বলেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে আমরা চুপ করে বসে থাকবো না। আমরা সরকারকে বলতে চাই এই দুঃসাহস দেখাতে যাবেন না। শেখ হাসিনা শুধু এদেশের মানুষকে নয় বিদেশীদেরও ধোঁকা দিয়েছেন। নির্বাচনের আগে অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচনের পর স্বৈরাচারী রুপ ধারণ করেছেন। তাই জনগণ বারবার প্রতারণা মেনে নেবে না। বিদেশীরাও ইতিমধ্যে তার ষড়যন্ত্র টের পেয়েছেন। শেখ হাসিনা দলীয়করণ করে নির্বাহী বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কোন স্থানেই চেইন অব কমান্ড নেই। আর আইনশৃঙ্খলার অবস্থা তো খুবই খারাপ। লুটেরাদের জন্য এই সরকার ব্যবহƒত হচ্ছে, মানুষের জন্য নয়। তাই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। এই নির্বাচনে জনগণ ঠিকমত ভোট দিতে পারলে ৩০/৪০টির বেশি ভোট পাবে না।

কর্মী সভায় উপস্থিত বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার গুম, হত্যা, হামলা, মামলা দিয়ে বিএনপিকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। এই সরকার বাংলাদেশকে পরিণত করেছে একটি কারাগারে। সরকার ২০১৪ সালের মত আবারো কোন দল ছাড়াই নির্বাচনের চেষ্টা করছে। তবে খালেদা জিয়া ছাড়া কোন নির্বাচন করতে দেয়া হবে না। হাসিনাকে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়েই নির্বাচনে যেতে হবে। আর এই নির্বাচনে হাসিনাকে পরাজিত করে গণতন্ত্রের পতাকা উত্তোলন করা হবে।

বক্তারা আরো বলেন, সারাদেশ এখন আওয়ামী লীগের ঘাটি। কেননা বিনা প্রতিদ্ন্দ্বীতায় ১৫৪টি আসন পেয়েছেন তারা। তবে সরকার গঠন করলেও এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছেন জনগণ।

কর্মী সভায় কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ারের সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আহসান হাবিব কামাল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চাঁন, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম শাহীন, উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার, সহ সম্পাদক আনোয়ারুল হক তারিন প্রমূখ।

খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here