শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : বেনাপোল ইমিগ্রেশন কাস্টমস পাসপোর্ট যাত্রীর কাছে ঘুষ চাওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে হাতাহাতিসহ দুধর্ষ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন পুলিশ ও ভুক্তভোগী যাত্রীদ্বয়। বুধবার বিকাল ৪ টা ৪০ মিনিট থেকে ৫ টা ৪৬ মিনিট পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হাতাহাতির প্রাক্কালে ইমিগ্রেশন অভ্যন্তরে থাকা গ্লাস ও আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়। পরে পোর্ট থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে এ মারামারির অবসান ঘটলেও নিজেদের অস্তৃত্ব ধরে রাখতে কাস্টমস সদস্যরা উক্ত যাত্রীর পণ্যগুলো ডিএম করায় সংবাদ কর্মীদের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এ যাত্রীদ্বয়। যার পাসপোর্ট নং- বিএম-০৭০৫৭২০ ও বিএইচ-০৭৫১২২৪।
পাসপোর্ট যাত্রী সাখাওয়াত হোসেন ও সৌরভ আলী খান বলেন, ভারত থেকে ফেরার পরে বেনাপোল ইমিগ্রেশন কার্যাদি শেষে কাস্টমস হয়ে বের হওয়ার সময় পথ গতিরোধ করে কাস্টমস সদস্যরা ঘুষ দাবি করে। পরে ইমিগ্রেশন ওসি ওমর শরীফের সাহায্য নিই। এসময় তিনি প্রতিবাদ করলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার সাথে অসাদাচরণ করে কাস্টমস সদস্যরা। এসময় ইমিগ্রেশনের অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা প্রতিবাদ করলে কাস্টমস ও পুলিশের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিসহ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকজন কাস্টমস ও পুলিশ সদস্য রক্তাক্ত জখম হয়। মারামারি শেষে উক্ত পণ্যগুলো ডিএম করে দেয় কাস্টমস কর্মকর্তারা।
পুলিশ বলেছেন, কাস্টমস কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে পাসপোর্ট যাত্রীদের জিম্মি করে ঘুষ নিয়ে থাকে। কেউ অপারগতা প্রকাশ করলে তার সাথে থাকা পণ্য ডিএম করে দেওয়ার ভয় দেখায়। অসহায় যাত্রীরা তাতেও ঘুষ না দিলে তাদের সাথে অসাদাচরণ করে পণ্যগুলো ডিএম করে দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার বিকেলে কাস্টমস সদস্যরা দুই পাসপোর্ট যাত্রীর কাছে ঘুষ দাবি করে। এসময় ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি প্রতিবাদ জানালে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় কাস্টমস সদস্যরা। এ সময় ইমিগ্রেশনে থাকা অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা প্রতিবাদ করলে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। যদিও কাস্টমস কর্মকর্তাদের দাবি করে বলেন, ইমিগ্রেশন ওসি সাদা পোশাকে থাকায় চিনতে না পেরে এই অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে।
এ সময় বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ওমর ফারুখ বলেন, দুই পাসপোর্ট যাত্রী কাস্টমস চেক থেকে বের হওয়ার সময় তাদের কাছে ব্যাগ প্রতি ৫’শ টাকা ঘুষ দাবি করে কাস্টমস সদস্যরা। এসময় তারা আমার কাছে অভিযোগ জানালে তা প্রতিবাদ করা হয়। একপর্যায়ে কাস্টমস কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম গালাগালি সহকারে উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
এ সময় বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা এক স্বর্ণ চোরাচালানীকে আটকের চেস্টাকালে দুই পুলিশ সদস্য বাধা প্রদান করে। এক পর্যায়ে স্বর্নবহনকারি পাসপোর্ট যাত্রী পালিয়ে যাওয়ায় এ ঘটনার সুত্রপাত ঘটে।
খবর ৭১/ এস: