খবর৭১:বাংলাদেশে নিযুক্ত নয়াদিল্লী ভিত্তিক অনাবাসিক দূতরা নিরাপত্তা ও মর্যাদাসহ মিয়ানমারের নাগরিকদের সঠিক প্রত্যাবাসন নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশকে তাদের সমর্থন দিয়েছেন।
নয়াদিল্লীতে নিযুক্ত ১৫টি দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও কূটনৈতিকরা রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকালে এ সমর্থন দেন।
দূতরা হলেন- বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, বুলগেরিয়া, ইথিওপিয়া, জর্জিয়া, গ্রিস, পর্তুগাল, স্লোভেনিয়া ও ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত, সাইপ্রাস, মরিশাস ও কেনিয়ার হাইকমিশনার, অস্ট্রিয়া, চেক রিপাবলিক ও ঘানার চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এবং নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় সচিব।
এ সময় ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী উপস্থিত ছিলেন। নয়াদিল্লী ভিত্তিক এসব মিশন প্রধান ও কূটনীতিকরা কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা বিনিময় করে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, তাদের (রোহিঙ্গা) ভোগান্তি খুবই বেদনাদায়ক।
এ সংকট নিরসনে আলোচনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তারা বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে তাদের স্বদেশ ভূমি রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে পারে সেজন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদানে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এতো ব্যাপকসংখ্যক মিয়ানমারের নাগরিককে আশ্রয় দেওয়া এবং তাদের আবাসনের ব্যবস্থা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মানবতার পরিচয় দিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
তারা বলেন, বাংলাদেশে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া খুব সহজ কথা নয়, এটির ব্যবস্থাপনা খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়। এই রোহিঙ্গা সমস্যা এখন শুধু বাংলাদেশের একার সমস্যা নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা বলেও তারা উল্লেখ করেন।
এ সময় রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং কূটনীতিকরা তাদের নিজ নিজ দেশের সরকারকে এ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করবেন বলেও জানান।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের নগরিকদের সেদেশে ফেরত নিতে আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার জন্য তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, মিয়ানমারের সরকারকে তার নাগরিকদের অবশ্যই দ্রুততার সঙ্গে যথাযথ মর্যাদা ও নিরাপত্তা দিয়ে ফেরত নিয়ে যেতে হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ও নেপিডো’র মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের উল্লেখ করে বলেন, মিয়ানমার তার নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় পুনর্বাসনে সহায়তায় রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশন, পরিচয়পত্র প্রদানসহ তাদের জন্য অস্থায়ী আবাসিক ব্যবস্থা গড়ে তোলায় তার সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য পৃথক একটি জায়গায় আবাসনের উদ্যোগও নিচ্ছে তার সরকার। আমরা মানবিক কারণেই তাদের আশ্রয় দিয়েছি। তবে ব্যাপক সংখ্যক জনগোষ্ঠীর ভার বহন করা বাংলাদেশের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য।
তিনি বলেন, জানিনা কবে মিয়ানমার তাদের প্রত্যাবাসন করা শুরু করবে। তবে এজন্য আন্তর্জাতিক চাপ বজায় রাখতে হবে।
রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকরা জানান, তারা বিজয় দিবসে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে আবেগাপ্লুত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে তার সরকারের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির পুনরোল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশে কোনো সন্ত্রাসীর আশ্রয় হবে না এবং বাংলাদেশের ভূখণ্ডকেও কারো বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে আমরা ব্যবহার করতে দেব না।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
খবর৭১/জি: