খবর৭১:মিরসরাই প্রতিনিধি:
মিরসরাইয়ে পরকিয়া সর্ম্পকের টানে ২ সন্তানের পিতার সাথে ৩ সন্তানের জননী প্রবাসীর স্ত্রী পালিয়ে গেছে। উপজেলার ১২ নম্বর খৈয়াছড়া ইউনিয়নের নিজতালুক গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে উভয়য়ের বিরুদ্ধে মিরসরাই থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। এমন ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৩ সালে খৈয়াছড়া ইউনিয়নের নিজতালুক গ্রামের মৃত হাফেজ মোঃ শফির পুত্র নুরুল বারি খোকনের সাথে একই উপজেলার কাটাছরা ইউনিয়নের তেতৈয়া এলাকার জমাদার বাড়ির কামাল পাশার মেয়ে রাশেদা আক্তারের বিয়ে হয় । তাদের সংসারে একে একে তিনজন কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। রাশেদার স্বামী খোকন দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাসে রয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে নিজতালুক গ্রামের মৃত ফকির আহমদের পুত্র সাইফুল ইসলাম খোকনের ঘরে আসা যাওয়া করতো। এর মধ্যে খোকনের স্ত্রীর সাথে তার পরকিয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত ৫ ডিসেম্বর খোকনের স্ত্রী রাশেদা সাইফুলের সাথে পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় সাইফুলের স্ত্রী রোকসানা আক্তার বাদি হয়ে স্বামী ও রাশেদার নামে মিরসরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। একই দিন খোকনের বোনের স্বামী রেদোয়ানুল হক বাদি হয়ে উভয়ের বিরুদ্ধে লুটের মামলা দায়ের করেছেন।
এক মামলার বাদি রোকসানা আক্তার জানান, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে রাশেদার সাথে আমার স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলে সে আমার উপর নির্যাতন করতো। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ইউপি চেয়ারম্যান সহ একাধিকবার সালিস হয়েছে। সালিসে ওই মহিলার সাথে আর কোন সম্পর্ক থাকবেনা বলে অঙিকার করে। কিন্তু গত ৫ ডিসেম্বর আমার স্বামী খোকনের স্ত্রী রাশেদাকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এখন আমি দুটি সন্তান ও বৃদ্ধ শাশুড়ীকে নিয়ে কিভাবে থাকবো, কিভাবে বাঁচবো বুঝতে পারছিনা। সংসারে সুখের আসায় আমার আমার বাবার বাড়ি থেকে পানির পাম্প মেশিন, ট্রাক্টর, ভ্যান গাড়ি কিনে দেয়। কিন্তু সে সব কিছু বিক্রি করে দিয়ে পালিয়ে গেছে। বিষয়টি মেম্বার, চেয়ারম্যানকে জানানোর পর থানায় মামলা করেছি।
আপর মামলার বাদি খোকনের বোনের স্বামী রেদোয়ানুল হক জানান, আমার সমন্ধি (স্ত্রীর বড় ভাই) দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাসে বসবাস করছে। সাইফুল মাঝে মধ্যে আমার শশুর বাড়িতে যেত। এক সময় সাইফুল ও রাশেদার মধ্যে পরকিয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবার, এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে একাধিকার বৈঠক হয়। কিন্তু তারা সুদরাতে পারেনি। গত ৫ ডিসেম্বর রাশেদা সাইফুলের সাথে পালিয়ে যায়। এসময় তার ব্যক্তিগত একাউন্টে বিদেশ থেকে বিভিন্ন সময় ঘর নির্মাণ করতে পাঠানো ১৫ লক্ষ টাকা, ১২ ভরি স্বর্ণালংকার ও মুল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। তার তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সেই সন্তানদের কথাও চিন্তা করেনি রাশেদা। তাই আমরা থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি।
খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য শামসুল ইসলাম বলেন, সাইফুল ও খোকনের স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে আমরা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে কয়েকবার বৈঠক করেছিলাম। উভয়ে আর সম্পর্ক রাখবেনা বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু গত কয়েকদিন পূর্বে খোকন বিদেশ থেকে ফোন করে জানান, তার স্ত্রী তাকে সর্বশান্ত করে পালিয়ে গেছে। তার জীবনে সঞ্চিত সব অর্থ নিয়ে পালিয়ে যায়। আমি বিষয়টি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছি।
এই বিষয়ে মিরসরাই থানার উপ-পরিদর্শক রমিজ আহম্মদ বলেন, পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দুটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
খবর৭১/জি: