এস. এম. রাসেল মাদারীপুর থেকে সংবাদদাতা :
মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্বরাস্তি এলাকায় ইটভাটার জমিজমা সংক্রান্তের পূর্বশত্রুতার জেরে মঙ্গলবার রাতের আধারে অতর্কিতভাবে ৪টি বাড়ীতে হামলা চালিয়ে প্রায় ১০/১১টি ঘরবাড়ী ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নগত টাকা ও স্বর্ণ অলংকারসহ প্রায় ১০/১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর দাবী। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোন মামলা না হলেও পুলিশ তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত নান্নু বেপারীর স্ত্রী নাজমা বেগম, শাহিন বেপারীর স্ত্রী কামরুন্নাহার, আম্বিয়া খাতুন সহ অনেকেই জানান, আমাদের ফসলী জমি জোর করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছিলো ইট ভাটার মালিক ছোবাহান ফকির, মাটি কাটায় বাধা দিলে শালিশ বসলে, কথার বাকবিতন্ডা পরে উল্টো আমাদের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। মামলার ভয়ে বাড়ীতে পুরুষ লোক না থাকায়, আনুমানিক রাত সাড়ে ১১’টার দিকে সন্ত্রাসী ছোবাহান ফকির (ইটভাটার মালিক) ও খবির খার নেত্রিত্বে একশ থেকে দেড়শত সন্ত্রাসী লোক রামদা, কুরাল, স্যানদা ও দেশিয় বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়ী ঘরে হামলা চালিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভাংচুর চালায়। আমাকে পুরুষ ভেবে শোয়া অবস্থায় রামদা দিয়ে এলোপাথাড়ী পিটাতে মারধর করতে থাকে আমার শিশু বাচ্চার চিৎকার শুনে বুঝতে পারে যে আমি মহিলা তাই আমাকে ছেড়ে দিয়ে আলমারী ও ডয়ার ভেঙ্গে স্বর্ণ অলংকার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আমরা ঐ সন্ত্রাসী ছোবাহান ফকিরসহ সকল সন্ত্রাসীর আইনের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমুলক বিচার চাই। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সদস্যরা আরো জানান, আমাদের বিভিন্ন ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণ অলংকরসহ প্রায় ১১/১২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে ঐ সন্ত্রসীরা।
স্থানী হেমায়েত মাতুব্বর জানান, যারা এই লুটপাট ও ভাংচুর করেছে তারা জঘন্য ন্যাক্কর জনক ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের দৃস্টান্ত মুলক শাস্তি দাবি করছি।
হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার ব্যাপারে ছোবাহান ফকির (ইটভাটার মালিক) সাক্ষাতে পাওয়া না গেলে মুঠো ফোনে জানান, আমি গত পরশু ঢাকায় এসেছি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা স¤পূর্ন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তবে আমি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি তাই কাউন্টার মামলা দেওয়ার জন্য এই হামালার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
উল্লেখ্য গত মোঙ্গলবার ১৪/১১/১৭ ইং রাতে ইট ভাটার মালিক ছোবাহান মিয়ার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে মিমাংশার জন্য ছোবাহান ফকির ও হাবি বেপারীর ইট ভাটার জমির টাকা সংক্রান্ত মিমাংশার জন্য শালিশ বসে। শালিশের কথার বাকবিতন্ড মধ্য দিয়েই ছোবাহান ফকিরের লোকজন ও শালিশ টুকু মোল্লার লোকজন উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জরিয়ে পরে এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ভাংচুর লুটপাটে ঘটনা ঘটে। এতে এক মহিলাসহ ২ জন আহত হওয়ায়, উভয় পক্ষে দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও বিশেষ শাখা) উত্তম প্রসাধ পাঠক জানান, গত রাতে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা শুনে তাৎক্ষনিক পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে। তবে আমরা প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছি, হাবি বেপারী ও ছোবাহান ফকিরের ইট ভাটার জমির টাকা সংক্রান্ত পূর্বে মারামারি ও ভাংচুরের ঘটনার বিষয় নিয়ে এই হামলা হয়েছে। এখন সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেনে রয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর ৭১/ ই: