লালমনিরহাট-১ আসনে জাতীয় পার্টিতে হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ

0
577

কাজী শাহ্ আলম, লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি:
লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইতোমধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এক পত্রে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অবঃ) মোঃ খালেদ আখতারকে প্রার্থী ঘোষনা দিয়ে সংগঠন গতিশীল করার দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু এরশাদ স্বাক্ষরিত ওই পত্রকে ভুয়া উল্লেখ্য করে মেজর (অবঃ) খালেদ আখতারকে প্রতিহত করার ঘোষনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় জাতীয় পার্টির সদস্য এম জি মোস্তফা।ফলে এ নিয়ে গোটা জেলায় ধুম্রজাল দেখা দিয়েছে।
তবে জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম আসনে এরশাদের ছোট ভাই দলের কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে প্রার্থী হিসাবে দেখতে চায়। প্রার্থী নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাল্টা-পাল্টি অবস্থানে মাঠ পার্যয়ে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। সব মিলে জেলার পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলায় জাতীয় পার্টিতে হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে।
গত ১৬ নভেম্বর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার স্বাক্ষরিত এক পত্রে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অবঃ) মোঃ খালেদ আখতারকে লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেন। ওই পত্রে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দুই উপজেলায় জাতীয় পার্টি ও সকল অঙ্গ সংগঠনের সর্বস্তরের কমিটি সমুহ গঠন-পুর্ণগঠন বা শক্তিশালী করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নিদের্শ দেন মেজর (অবঃ) মোঃ খালেদ আখতারকে। একই সাথে মেজর (অবঃ) মোঃ খালেদ আখতারকে সহযোগিতার নিদের্শ দেন জেলা জাতীয় পার্টির কমিটিকে। কিন্তু জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও হাতীবান্ধা উপজেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক এম জি মোস্তফা বলেন, লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনে এখনো কোন প্রার্থী চুড়ান্ত করেনি দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
মেজর (অবঃ) মোঃ খালেদ আখতারকে প্রার্থী করে এরশাদ স্বাক্ষরিত ওই পত্রটি ভুয়া। প্রার্থী ঘোষনা দিবেন দলের মনোনয়ন বোর্ড। দলের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া পত্র তৈরী করেছেন একটি মহল। তারপরও যদি এ আসনে মেজর (অবঃ) মোঃ খালেদ আখতারকে প্রার্থী করা হয় তাহলে দলের নেতা-কর্মীরা তাকে প্রতিহত করবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এক পত্রে প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অবঃ) মোঃ খালেদ আখতারকে প্রার্থী ঘোষনা দিলেও মাঠে তাকে দেখা যায়নি। এ দিকে জাতীয় পার্টির পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলার বিভিন্নস্থরের নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা এ আসনে দলের কো-চেয়ারম্যান ও এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদেরকে প্রার্থী হিসাবে দেখতে চায়। লালমনিরহাট জেলায় জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের কাছে জি এম কাদের ক্লিন ইমেজের নেতা হওয়ায় বেশ জনপ্রিয়। গত ১৮ নভেম্বর হাতীবান্ধায় এক মত বিনিময় সভায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের উপস্থিতিতে পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলার দলীয় নেতা-কর্মীরা বহিরাগত প্রার্থীকে প্রতিহিত করার ঘোষনা দিয়ে জিএম কাদেরকে এ আসনে প্রার্থী হওয়ার দাবী জানান।
হাতীবান্ধা উপজেলা জাতীয় ছাত্র সমাজের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এ আসনে আমরা দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অথবা কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাই। যদি তারা প্রার্থী না হয় তাহলে স্থানীয় প্রার্থী দিতে হবে। বহিরাগত কোন প্রার্থী আমরা মেনে নিবো না। বহিরাগত কোনো প্রার্থী দিলে সেই প্রার্থীকে যে কোন মূল্যে প্রতিহত করা হবে। তবে জি এম কাদের নিজের প্রার্থীতা নিয়ে কৌশল অবলম্বন করে বলেন, দেশ কোন পথে যাচ্ছে? দেশে কেমন নির্বাচন হবে ? সেই নির্বাচন দেশের জনগণ মেনে নিবেন কি ? নির্বাচনের পর দেশের অবস্থা কি হবে ? তা এখনও নিশ্চিত নয়। নির্বাচন তো অনেক দুরে। আগে দেশ রক্ষার জন্য আমাদের কি করনীয় ? তা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে দলের চেয়ারম্যান যে আসনে আমাকে প্রার্থী দিবেন আমি সেই আসন থেকেই নির্বাচন করব। লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সম্পাদক অধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম মিঠু বলেন, দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ লালমনিরহাট-১ আসনে মেজর (অবঃ) মোঃ খালেদ আখতারকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষনা করেছেন। জেলা জাতীয় পার্টি তাকে সহযোগিতা করছে। এ প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অবঃ) মোঃ খালেদ আখতার বলেন, দলের চেয়ারম্যানের নিদের্শ নিয়ে আমি এলাকায় দলকে গতিশীল করছি। দলের শৃংখলা কেউ ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে পার্টির চেয়ারম্যান ও দল সিদ্ধান্ত নিবেন।#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here