খবর ৭১:ভারতের সেলেব্রিটি শেফ সঞ্জীব কাপুরের নেতৃত্বে গত শনিবার ৫০ জনের একটি দল একবারে ৯১৮ কেজির খিচুড়ি রেঁধে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তোলার যে দাবি পেশ করেছে- তার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে আজমির শরিফ দরগা।
আজমির শরিফের বর্তমান প্রধান সৈয়দ সালমান চিশতি জানাচ্ছেন, তাদের দরগায় গত সাড়ে চারশ বছর ধরে রোজ দুটো ডেকচিতে ২৪০০ কেজি ‘নিরামিষ মিষ্টি পোলাও’ রান্না হয়ে থাকে, যেটি খিচুড়িরই সমতুল্য।
চিশতি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনে করছেন, রোজ ২৪০০ কেজি খিচুড়ি রান্নার সঙ্গে একদিন ৯০০ কেজি খিচুড়ি রান্নার কোনো তুলনাই হতে পারে না। কাজেই বিশ্বরেকর্ডের দাবিদার কেউ হলে সেটি আজমির শরিফই!
তবে সেই সঙ্গেই তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছে এখনই রেকর্ডের জন্য আবেদন করার কোনো পরিকল্পনা আজমির শরিফের নেই।
ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমকে সৈয়দ সালমান চিশতি বলেন, আমরা হলাম সুফি মতাবলম্বী- প্রচারের আলোয় আমরা থাকতে চাই না কখনই। তবে এটিও ঠিক, শত শত বছর ধরে এই দরগায় যে রোজ বিপুল পরিমাণ রান্না হয় তারও একটি স্বীকৃতি দরকার।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষে দিল্লিতে ভারত সরকারের উদ্যোগে যে ‘ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া ২০১৭’ আয়োজিত হয়েছিল, সেখানেই ৯০০ কেজিরও বেশি খিচুড়ি রেঁধে বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রয়াস নেওয়া হয়েছিল।
তারকা শেফ সঞ্জীব কাপুর ছাড়াও সেই খিচুড়ি রাঁধায় হাত লাগিয়েছিলেন ভারতের অন্তত দুজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
ভারতের সুপরিচিত ‘যোগগুরু’ বাবা রামদেব নিজে সেই খিচুড়িতে ‘তড়কা’ যোগ করেন। পরে সেই বিপুল পরিমাণ খিচুড়ি বিলি করা হয় দিল্লির বিভিন্ন অনাথ আশ্রম বা এতিমখানায়।
এই রন্ধনযজ্ঞের মাধ্যমে খিচুড়িকে ‘ব্র্যান্ড ইন্ডিয়া সুপার ফুড’ হিসেবে প্রোমোট করার সিদ্ধান্তও ঘোষিত হয়।
ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী হরসিমরত কাউর বাদল থেকে শুরু করে বাবা রামদেব- সবাই বলেন, খিচুড়ির মতো পুষ্টিকর ও খাদ্যগুণে ভরপুর পদ আর নেই বললেই চলে।
তবে একসঙ্গে এত পরিমাণ খিচুড়ি রান্নার এটিই বিশ্বরেকর্ড কিনা, গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাৎক্ষণিকভাবে তার কোনো স্বীকৃতি এখনও দেয়নি।
কিন্তু এরই মধ্যে আজমির শরিফ দরগার প্রধান রবিবার টুইট করে জানান, ‘আমাদের দরগায় রোজ ছোট ডেকচিতে ৮০০ কেজি আর বড় ডেকচিতে ১৬০০ কেজি ভেজ সুইট রাইস (খিচুড়ি) রান্না করা হয়ে আসছে গত সাড়ে চারশ বছর ধরে।’
সেই সঙ্গেই সৈয়দ সালমান চিশতি দরগার ছোট ও বড় ডেকচিতে সেই পোলাও বা খিচুড়ি রান্নার বেশ কিছু ছবিও পোস্ট করেন।
আজমির শরিফ দরগা যদিও এর পরও বিশ্বরেকর্ডের জন্য গিনেস বুক কর্তৃপক্ষের কাছে সরকারিভাবে কোনো দাবি পেশ করছে না, তাদের সেই টুইটের পর বাবা রামদেব-সঞ্জীব কাপুরের রান্না করা খিচুড়ির দাবি নিয়ে কিন্তু এর মধ্যেই প্রশ্ন উঠে গেছে।
খবর ৭১/ এস: