শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল প্রতিনিধি: দীর্ঘ ৫২ বছর পর কাল থেকে আবারো বেনাপোল হয়ে খুলনা-কলকাতা রেলপথে সরাসরি যাত্রা শুরু করল ‘বন্ধন’ এক্সপ্রেস নামের একটি যাত্রীবাহী মৈত্রী ট্রেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১০ টার সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্রেনটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন।
ট্রেনটি ৯ নভেম্বর/১৭, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ভারতের কলকাতার চিৎপুর থেকে ছেড়ে ভারতের হরিদাসপুর ইমিগ্রেশন ও বেনাপোল এসে থামবে। পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা ছেড়ে বেলা ১২টার সময় খুলনা পৌছাবে। সেখান থেকে আবার যাত্রী নিয়ে বেলা ২ টার সময় কোলকাতার উদ্দেশ্য ছেড়ে যাবে। ট্রেনটিতে মোট ৪৫৬টি সিট থাকবে। ৩১২টি এসি এবং ১৪৪টি কেবিন চেয়ার থাকছে।
আপাতত বেনাপোল ও ভারতের হরিদাসপুরে পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতার কাজ করা হবে। খুলনা ও ভারতের চিৎপুর এলাকায় কাষ্টমস ইমিগ্রেশনের অফিসের কার্যক্রম শেষ হলে পরে সেখানে পাসপোর্টযাত্রীদের আনুষ্ঠানিকতা করা হবে।
বেনাপোল রেল ষ্টেশন মাষ্টার সাইদুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার ‘বন্ধন’ এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি পরীক্ষামুলক ভাবে কলকাতা থেকে খুলনার উদ্দেশ্য ছেড়ে আসবে। তবে নির্ধারিত সময় ৭ টা ১০ এর সময় ছেড়ে আসার কথা থাকলেও আজ সময়মত ট্রেনটি ছেড়ে আসতে পারবে না। কারন ১০ টার সময় বাংলাদেশ এর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্রেনটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরো জানান, গত ৭ নভেম্বর বাংলাদেশ থেকে সিসি এম মিহির কান্তি গুহর নেতৃত্বে ট্রেনটি কলকাতা থেকে আনতে ৭ সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল ভারতে গেছেন। বৃহস্পতিবার(আজ) তারা ভারতের প্রতিনিধি দলের সাথে দেশে ফিরবে। আগামি ১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে ‘বন্ধন’ এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি আনুষ্ঠানিক ভাবে সপ্তাহে একবার এ রুটে চলাচল করবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানান, আপাতত বেনাপোল ও ভারতের হরিদাসপুরে পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতার কাজ করা হবে। খুলনা ও ভারতের চিৎপুর এলাকায় কাষ্টমস ইমিগ্রেশনের অফিসের কার্যক্রম শেষ হলে পরে সেখানে পাসপোর্টযাত্রীদের আনুষ্ঠানিকতা করা হবে।
এ বিষয়ে বেনাপোল ইমিগ্রেশন ইনচার্য(ওসি) ওমর শরীফ বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে ‘বন্ধন’ এক্সপ্রেস নামের একটি মৈত্রী ট্রেন সপ্তাহে একবার এ রুটে চলাচল করবে। সেলক্ষ্যে বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনে পাসপোর্ট যাত্রীদের সেবাদানে ইমিগ্রেশন পুলিশ সকল কার্যাদি সম্পন্ন করেছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল/১৭ দিল্লী থেকে ভিডিও কনফারন্সেরের মাধ্যমে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে পতাকা নেড়ে ট্রেনটির প্রাথমিক ভাবে উদ্বোধন করেছিলেন। ওই দিন পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেনটি কলকাতা থেকে ছেড়ে খুলনা হয়ে কলকাতায় গিয়ে পৌঁছে। এর আগে ব্রিটিশ আমলে পশ্চিমবঙ্গের সমৃদ্ধ শহর কলকাতার সঙ্গে পূর্ব বাংলার খুলনা ও গোয়ালন্দের ট্রেন যোগাযোগ চালু হয়। কিন্তুু ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে দু’টি রুটিই বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৪ সালের এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তঃদেশীয় সরকারি রেলওয়ে সভায় খুলনা-কলকাতা যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর প্রস্তাব করা হয়েছিল। এর আগে তিন দফায় দিনক্ষণ নির্ধারণ করেও খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রীবাহী রেল চলাচল শুরু করা যায়নি। প্রথম দফায় গত পয়লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) এ ট্রেন চালুর কথা ছিল। কিন্তু ওই তারিখে ট্রেন চালু করা সম্ভব হয়নি।
খবর ৭১/ এস: