জোড়া ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গিয়েছে মিয়ানমারের বিস্তীর্ণ এলাকা। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককেরও কিছু অংশ। ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন বা ‘আফটারশক’ নিয়ে এখনও আতঙ্ক কাটেনি। ব্যাঙ্ককে বহু মানুষ ভূমিকম্পের সময়ে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। তারা অনেকে এখনও বাড়ি ফেরেননি।
যে ব্যাপক শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে মিয়ানমারে, তাতে মোট নিহতের সংখ্যা কয়েক হাজার হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ ও গবেষণা সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস)। নিজস্ব ওয়েবসাইটে দেয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘যে মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে, তাতে আমারা ধারণা করছি যে মিয়ানমারের বিস্তৃত অংশ জুড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।’
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ব্যাঙ্ককের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের সামনে বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করেছে। জান্তার তরফে টেলিগ্রামে জানানো হয়েছে, মিয়ানমারের ছ’টি রাজ্য এবং প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হচ্ছে। গৃহযুদ্ধের কারণে জান্তা সেনা অনেক এলাকায় পৌঁছোতে পারেনি। যে যে এলাকা বিদ্রোহীদের দখলে, সেখানে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কেমন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সেই এলাকাগুলিতে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়া যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
ভূমিকম্প-পরবর্তী পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের জাতীয় বিমান সংস্থা বেশ কিছু ফ্লাইট বাতিল করেছে। সমাজমাধ্যমে এই সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে তারা। দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মিয়ানমারের মোট পাঁচটি শহরে ভূমিকম্পের কারণে বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। ভেঙেছে দু’টি সেতু। এ ছাড়া, একটি জাতীয় সড়ক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে পড়া ভবনের সংখ্যা প্রচুর। তবে হতাহতের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট করা হয়নি।
মিয়ানমারের মান্দালয় শহরে ভূমিকম্পের প্রভাব ছিল সবচেয়ে বেশি। একটি আস্ত মসজিদ ভেঙে পড়েছে সেখানে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি, মসজিদের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘আমার চোখের সামনে একটা পাঁচতলা বাড়ি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। গোটা শহরে সবাই রাস্তায়। কেউ কোনও বাড়ির ভিতরে ঢোকার সাহস পাচ্ছেন না। আমরা খুব ভয়ে আছি।’