বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টাসহ সেখানে যারা ছিলেন তারা অতি দ্রুত একটি নির্বাচন দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। প্রধান উপদেষ্টা এও বলেছেন— ডিসেম্বরের মধ্যে একটি নির্বাচন দেওয়ার জন্য তারা কাজ করছেন। জনগণের প্রত্যাশা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবে সরকার।
তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি এবং জনগণও তা প্রত্যাশা করছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কবে নাগাদ রোডম্যাপ ঘোষণা দেবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা উনারা (সরকার) দেবেন। ১৫ তারিখের মধ্যে উনারা কিছু একটা বলতে পারেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সঙ্গে যারা আছেন তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, অতি দ্রুত তারা নির্বাচনের ব্যবস্থা করছেন। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন- ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা করার জন্য কাজ করছেন।
‘আমরা আশা করব, জনগণের যে প্রত্যাশা আছে, একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন তিনি। সেটার মধ্য দিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি’।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিএনপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যমুনায় বৈঠক করেন।
প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে যেগুলো উদ্বেগের বিষয় সেগুলো তুলে ধরেছি। বৃহত্তর দল হিসেবে আমাদের একটা দায়িত্ব ছিল সেটি পালন করেছি। সম্প্রতি যে ঘটনাগুলো ঘটেছে- এগুলোর দায় সরকার এড়াতে পারে না। কারণ বাহিনীগুলোর সামনে ঘটনা ঘটেছে। এতে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি বা স্থিতিশীলতা ব্যাপকভাবে বিপন্ন হয়েছে। এসব প্রক্রিয়ার কারণে ফ্যাসিবাদকে কথা বলার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
‘অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত নির্বাচন করার জন্য তাগাদা দিয়েছি’ জানিয়ে তিনি বলেন, ন্যূনতম সংস্কার করে দূরত্ব নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছি। প্রশাসনে যারা ফ্যাসিবাদের দোসর, যারা বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে এবং পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছি। সেই সঙ্গে যারা দেশের অর্থনীতি লুণ্ঠন করেছে, তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ও শাস্তির জন্য দাবি করেছি।
তিনি বলেন, ১৫ বছর ধরে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, এগুলো প্রত্যাহারের জন্য দাবি করেছি। তারা এপ্রুভ করেছেন নৈতিকভাবে। আমরা বলেছি, সরকারের প্রধান ব্যর্থতা হচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা। এ ব্যাপারে সরকার আমাদেরকে বলেছে- তারা এ বিষয়ে কাজ করছেন।
‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা সরকারপ্রধানকে বলেছি- এ ধরনের অভিযান আগে হয়েছিল। তবে কোনোভাবেই ইনোসেন্ট কোনো মানুষই যেন আক্রান্তের শিকার না হয়। এ বিষয়ে যেন কোনো সমস্যা তৈরি না হয়।