হাসিনার আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন ছিল দূর আকাশের তারা: রিজভী

0
12

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। দেশ কীভাবে চলবে তা নির্ধারণ করবে এই দেশের জনগণ, অন্য কোন দেশকে তা নির্ধারণ করতে দেয়া হবে না।’

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় রাজশাহীর শহীদ জিয়াউর রহমান শিশু পার্কের সামনে মহানগর যুবদল আয়োজিত শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন ছিল দূর আকাশের তারা। দিনের ভোট রাতে হবে, এটা হচ্ছে শেখ হাসিনার গণতন্ত্র। শেখ হাসিনা ক্ষমতা রক্ষার জন্য শুধু ভারতকেই মুরব্বি মানতেন। গোপন চুক্তির মাধ্যমে তিনি ভারতের স্বার্থে সব কিছুই দিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলতো আওয়ামী লীগের সবাইকে টাকা দিয়ে কেনা যায় শুধু তাকে ছাড়া। কিন্তু তিনি ও তার পরিবার ক্ষমতায় থেকে সকল অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। পলাতক হাসিনার কাছে বাংলাদেশ ছিল টাকার খনি। শেখ হাসিনা ও তার পরিবার দেশ থেকে ৮০ হাজার কোটি লুট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছিলেন সবাইকে কিনা যায় কিন্তু আমাকে কেনা যায় না। আবার বলেছেন দেশে গণতন্ত্র দিয়েছি, মানুষের খাবার দিয়েছি। কিন্তু আপনি যে কত কিছু নিয়েছেন তা বলেননি। আপনার আমলে মা ভাতের জন্য সন্তানকে বিক্রি করেছে ‘

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘শেখ হাসিনার গণতন্ত্র মানে কেউ ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যেতে পারবে না। শেখ হাসিনার গণতন্ত্র মানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে নির্বাচনের আগে জেলে ঢোকানো। তিনি এগুলো কেন করেছেন? তিনি এগুলো করেছেন কারণ বাংলাদেশ ছিল তার টাকার খনি। এই দেশ থেকে টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করতেন তার পরিবার এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এবং তার ব্যবসায়ীরা টাকা লুটপাট করে বিদেশে মালয়েশিয়ায় কানাডায় বাড়ি করে পরিবার পরিজন স্ত্রী সন্তান রাখার জন্য। সত্য কখনো লুকিয়ে রাখা যায় না। সত্য প্রকাশিত হবে। এখন আমরা তার প্রমাণ পাচ্ছি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার জন্য শিশু সন্তানকে হত্যা করেছে।কিন্তু তার শেষ রক্ষা হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘দেশীয় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। নির্বাচন কমিশনসহ আমাদের কিছু সংস্কার দরকার। তার মানে এই নয় যে সংস্কারের নামে নির্বাচন দেরি করতে হবে। গত ১৭ বছর দেশের জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে সুষ্ঠু নির্বাচন দূর আকাশের তারা করে দেয়া হয়েছিল।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারকে দেশের সকল জনগণ সমর্থন দিয়েছে। নিঃসন্দেহে তিনি গুণী মানুষ। তাকে যদি কোন বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দেয়া হয় তাহলে মানুষের মনে প্রশ্ন দেখা দেবে। তাই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আপনি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। আপনি বলেন, এত তারিখে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। যদিও তিনি বারবার বলেছেন এত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। তাই এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না। সরকার একটি সঠিক সিদ্ধান্ত অবশ্যই নিবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে মানুষ কথা বলতে পারত না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গোয়েন্দা বাহিনী ধরে নিয়ে যায় কি না। অন্তত পক্ষে কথা বলার সমাবেশ করার নিশ্চয়তা এই সরকারের আমলে আছে। সুতরাং এগুলো আরো নিশ্চিত করার জন্য এবং এ দেশ কীভাবে চলবে তার নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ বিদেশিরা না।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here