প্রতি বছরের মতো এবারও বর্ষসেরা (কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার) দেশ নির্বাচন করেছে ‘দ্য ইকোনমিস্ট’। লন্ডনভিত্তিক প্রভাবশালী এই গণমাধ্যমটি ২০২৪ সালের বর্ষসেরা দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দ্য ইকোনমিস্টের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার পতনের স্বীকৃতিস্বরূপ এই খেতাব দেওয়া হয়েছে।
ম্যাগাজিনটি ১৯ ডিসেম্বর তাদের ওয়েবসাইটে ঘোষণা দিয়ে বলেছে, ‘আমাদের এবারের বিজয়ী বাংলাদেশ, যারা একজন স্বৈরাচারকে উৎখাত করেছে।’
এছাড়া গত ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদের অর্ধশতাব্দীর নিষ্ঠুর বংশানুক্রমিক একনায়কত্বের অবসান ঘটিয়ে সিরিয়া রানার-আপ হয়েছে।
ইকোনমিস্ট উল্লেখ করেছে, আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, যিনি সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ১৫ বছর ধরে শাসন করছিলেন। ম্যাগাজিন উল্লেখ করেছে যে কীভাবে একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর কন্যা দমনপীড়নমূলক শাসক হয়ে উঠেছিলেন, নির্বাচনে কারচুপি করেছিলেন, বিরোধীদের কারাগারে পাঠিয়েছিলেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
‘তার শাসনামলে বড় অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে’ বলেও ম্যাগাজিনে উল্লেখ করা হয়েছে।
দ্য ইকোনমিস্ট জানিয়েছে, বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলে প্রতিশোধমূলক সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে। তবে এবারের পরিবর্তনটি উৎসাহব্যঞ্জক। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অস্থায়ী অন্তর্বর্তী সরকার, শিক্ষার্থী, সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সমর্থন পাচ্ছে। এই সরকার আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে।
২০২৫ সালে এই সরকারকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে হবে এবং নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এদিকে প্রথমে নিশ্চিত করতে হবে যে আদালত নিরপেক্ষ এবং বিরোধীদলকে সংগঠিত হওয়ার সময় দিতে হবে।
ইকোনমিস্ট জানিয়েছে, ‘আর এসব কাজ সহজ হবে না। তারপরও একজন স্বৈরাচারকে উৎখাত করায় এবং অনেক উদার সরকারের পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এবার বাংলাদেশ আমাদের ‘কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার’ হয়েছে।’
তালিকায় বাংলাদেশের পরেই আছে সিরিয়ার নাম। সম্প্রতি বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা সিরিয়া এ বছরের রানারআপ নির্বাচিত হয়েছে। এছাড়া, অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য আর্জেন্টিনা, খারাপ সরকারের বিপক্ষে গিয়ে নতুন সরকার গঠনের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা ও পোল্যান্ড এই চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে।