সাকিব আল হাসানের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে কী তাহলে? ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়িয়ে তিনি কী টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন? কানপুরে দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগে বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন তিনি ক্যারিয়ারের শেষ টি-টোয়েন্টি খেলে ফেলেছেন আগেই। এবার টেস্টকে বিদায় জানানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সাকিব এটাও বলেছিলেন দেশের মাটিতে জীবনের শেষ টেস্ট খেলতে চান। এ নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে কোনো মন্তব্য না করায় শুরু থেকেই সমালোচনা শুনতে হয়েছে বাংলাদেশের অলরাউন্ডারকে। এমনকি তোপের মুখেও পড়েছেন দেশ সেরা এই অলরাউন্ডার। মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের চত্বরে দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ছবি টানিয়ে জুতাপেটা করেছেন একদল শিক্ষার্থী। একইসঙ্গে স্টেডিয়াম এলাকায় সাকিব বিরোধী গ্রাফিতিও আঁকেন তারা। গত কয়েকিদন ধরে চলা এসব কর্মকাণ্ডে সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
তবে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া রবিবার জানালেন, সাকিবের দেশে আসা নিয়ে আইনি কোনও বাধা নেই। সাকিবকে নিয়ে সাম্প্রতিক বিষযগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই মিরপুরে আজ ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, ‘একজন ক্রিকেটার তিনি খেলবেন এবং তিনি বাংলাদেশের নাগরিক, আসার ক্ষেত্রে তো কোনও বাধা আমি দেখি না। তবে যেটা দেয়াল লিখনের কথা বলছেন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু দেখেছি, এটা তো আসলে আবেগের ব্যাপার। তাদের ওই অধিকার আছে। তবে এক্ষেত্রে কারো নিরাপত্তা যেন আমরা হুমকির মুখে না ফেলি।’
আইনমন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও সাকিন ইস্যুতে কথা হয়েছে বলে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে আসা কিংবা বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা তো থাকার কথা না। আর আইনের বিষয়টা আইন মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা করতে পারবে। আমি বিশেষজ্ঞও না কিংবা আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও না। আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাাদেরও কথা হয়েছে। আসিফ নজরুল স্যার ইতোমধ্যে বলেছেন সংশ্লিষ্টতা না পেলে প্রাথমিক তদন্তেই আসলে যে মামলা হয়েছে হত্যা মামলা। ওখান থেকে নাম বাদ পড়ে যাবে।’
ক্রীড়া উপদেষ্টা আহ্বান জানিয়েছেন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার, ‘যদি আইনগত কোনও বিষয় থাকে, আইন তো আইনের গতিতে চলে। এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে পারবো না। তো নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকা আসবে, আমাদের পরিবেশটাও ভালো রাখতে হবে। না হলে বাইরের দেশগুলো বাংলাদেশে খেলতে আসতে নিরাপত্তার অভাবটা অনুভব করবে।’
চলতি মাসে দক্ষিণ আফ্রিকা পা রাখবে বাংলাদেশ সফরের জন্য। এই সিরিজকে সামনে রেখে বিসিবির দল ঘোষণা করতে হবে। সাকিবকে নিয়ে এই অবস্থায় তারা কী ভাবছে এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ বলেছেন, ‘দল দেওয়ার বিষয়টা তো বিসিবি দেখবে। রাষ্ট্রের জায়গা থেকে প্রত্যেক নাগরিকেরই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এবং ক্রিকেট দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেটা আমরা নিশ্চিত করবো।’