ফ্যাসিবাদ সরকারের হয়ে যেসব প্রশাসনের কর্মকর্তারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের দ্রুত অপসারণ করে সৎ ও পদবঞ্চিতদের দায়িত্বে নিয়ে আসতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় পার্টির সাবেক চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৫-১৬ বছরের দীর্ঘ সংগ্রামে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হয়েছে। দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তার এই চলে যাওয়াটা আমাদের কাছে নিঃসন্দেহে বড় বিজয়।
বন্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বন্যা হতে পারে। অতি বৃষ্টিতে বন্যা হবে। কিন্তু এবারের বন্যা ক্রিমিনাল অপরাধ। ভারত যে বাঁধ খুলে দিয়েছে তাতে ভাটিতে কী অবস্থা হবে, সেটা অবহিত করা হয়নি। যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। অপ্রস্তুত অবস্থায় পানির ঢলে ভেসে গেছে বহু মানুষ, অনেকে মৃত্যুবরণ করেছে। তারা এখন অনেকে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। আমি তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছি।
দেশের সংকটকাল নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একটা ক্রান্তিকালে আছি। একটি সফল ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসেছে। এই সরকারের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। এই সরকারের প্রধান সারাবিশ্বের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব।
তিনি বলেন, এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের পরে এমন একটা নির্বাচন দেবেন যে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। এরমধ্যে যত জঞ্জাল আছে সেগুলো পরিষ্কার করবেন। এতদিন চিন্তিত ছিলাম প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে কোনো কথা শুনতে পাচ্ছিনা। কালকে উনি কথা বলেছেন, জাতির উদ্দেশ্য ভাষণ দিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য হলো, তিনি বলেছেন-কবে নির্বাচন হবে সেটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, এটা সঠিক। তবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করতে হবে। আমি আশা করবো, প্রধান উপদেষ্টা সেই প্রক্রিয়ায় যাবেন। তিনি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলবেন। আমরা আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা একটি রোডম্যাপ দেবেন। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার মুখ থেকে সেটা শুনতে পাইনি।
প্রধান উপদেষ্টার মামলা প্রত্যাহারের প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, আমাদের প্রায় ৬০ লাখ লোকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। পত্রিকায় দেখলাম, প্রধান উপদেষ্টার মামলা উঠানো হয়েছে। আরেকজন উপদেষ্টার মামলা তুলে নেয়া হয়েছে। আমরা চাই আমাদের এক লাখ ৪৫ হাজার মামলা অবিলম্বে তুলে নিতে হবে।
আনসার সদস্যদের আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, গতকাল সচিবালয়ে ঘেরাও করে আনসার সদস্যদের পোশাক ব্যবহার একটা গোলযোগ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলো। ছাত্ররা সেটা নস্যাৎ করে দিয়েছে। এটা কিন্তু অশনি সংকেত। অর্থাৎ যারা পরাজিত শক্তি তারা চায় বিভিন্নভাবে এই বিজয়কে নস্যাৎ করার জন্য। আমরা জনগণকে আহ্বান জানাবো, এই বিষয়গুলোকে প্রশ্রয় না দেয়ার জন্য।