সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ ঢাকা কলেজের হলগুলো থেকে উদ্ধার করা দেশীয় অস্ত্রের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু অস্ত্রই নয়, মদ-গাজা-ইয়াবার পাশাপাশি জন্মনিরোধক বস্তুও দেখা গেছে। এসব উদ্ধার করা হয়েছে কলেজটির হলে ছাত্রলীগের দখলে থাকা রুম থেকে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে রুম ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ছাত্রলীগের কর্মীদের রুমে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে এসব অস্ত্র। উদ্ধার করা অস্ত্র, হেলমেট, মাদকদ্রব্য সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ঢাকা কলেজের সাতটি হলে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, স্ট্র্যাপ, হেলমেট, মদ, গাঁজা ও ইয়াবা উদ্ধার করা করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় পুলিশের তিনটি হেলমেট পাওয়া যায়।
তবে কলেজের উত্তর ও আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাসে অভিযানের আগে অস্ত্র, চাকরির তদবিরপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
অভিযানে ১৫০টি চাপাতি, ৭০টি রামদা, হকিস্টিক ৯৫টি, ১২৫টি হেলমেট, ৪৫টি বিভিন্ন আকারের ছুরি, ৪৫টি মদের বোতল, ৮টি গাঁজার বোতল, ১৫টি ইয়াবা এবং সেবন স্টিক পাওয়া যায়। এছাড়াও চাকরির তদবিরপত্র, জমির দলিল, বিভিন্ন মামলার নথি পাওয়া যায় হলগুলোর বিভিন্ন কক্ষ থেকে।
বিপুল পরিমাণ অস্ত্রের বিষয়ে দক্ষিণ ছাত্রাবাসের হল প্রভোস্ট আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিগত দিনে স্বৈরশাসনের আমলে সারা বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে অবস্থা, ঢাকা কলেজ এর বাহিরে নয়। এখানে আমরা বার বার অধ্যক্ষকে বলেছি, কিন্তু তিনি কথায় গুরুত্ব দেননি। কখনো কোনো অভিযানের ব্যবস্থা করেননি। অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং যেসব শিক্ষক ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করে এসেছেন, পরে তারা দুর্নীতির মাধ্যমে বিসিএস শিক্ষক হয়েছেন এবং যাদের আত্মীয়-স্বজন মন্ত্রী-এমপি ছিলেন, তাদের ছত্রছায়ায় তারা এগুলো করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা কলেজের অন্যতম সমন্বয়ক তাওহীদুল ইসলাম বলেন, তালা লাগানো রুমগুলো আমরা তালা ভেঙে প্রতিটি রুমে ঢুকে দেখি রুমগুলো এলোমেলো। মনে হয় কিছু হলে আগে থেকে অস্ত্রগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন হলে অভিযান চালিয়ে ছুরি, চাপাতি, মদের বোতল, হেলমেট, কনডম, মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছি।