বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ম্যাডামের জন্মদিনে একটা সুসংবাদ দিতে চাই, আল্লাহ যদি রহম করেন, ম্যাডামকে অতি শিগগির আমরা বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। খালেদা জিয়া যেন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে দেশবাসীর কাছে ফিরে আসতে পারেন, এ জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
খালেদা জিয়ার জন্মদিন (১৫ আগস্ট) উপলক্ষে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলের বিএনপির মহাসচিব এ কথা বলেন।
এসময় তিনি অভিযোগ করেন, ভারতে বসে শেখ হাসিনা দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে। আমরা দীর্ঘ লড়াই করেছি… তারপরে যদি মনে করেন যে, আমাদের লড়াই শেষ হয়ে গেছে তাহলে ভুল করবেন। এখন অত্যন্ত একটা ভাসমান অবস্থায় আছে। ভারতে বসে আছেন শেখ হাসিনা, যেকোনও মুহুর্তে তিনি তার সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন… ইতোমধ্যে চক্রান্ত শুরু করেছে, সেই চক্রান্ত প্রতিরোধ করাই আমাদের কাজ।”
তিনি বলেন, ‘‘আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে আসুন আমরা সবাই সেই প্রতিজ্ঞাই আল্লাহতালার কাছে করি তিনি যেন আমাদের বিএনপির যে ভাবমূর্তি যেটা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তৈরি করেছেন, বেগম খালেদা জিয়া তৈরি করেছেন, তারেক রহমান সাহেব তৈরি করেছেন সেই ভাবমূর্তিকে সবাই অক্ষুন্ন রেখে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।”
‘‘আমরা বিএনপি ১৭ বছর ধরে লড়াই করে তার একটা ভিত্তি তৈরি করেছি সেই ভিত্তির ওপরে দাঁড়িয়ে আমাদের ছেলেরা তরুন-যুবক-ছাত্ররা তারা আন্দোলন বিজয় পর্যায়ে নিয়ে গেছে… বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে… আবু সাঈদ থেকে শুরু করে আরও অনেকে… প্রায় হাজার খানেক ছাত্র-শিক্ষার্থী প্রাণ দিয়েছে। ৩-৫ আগস্ট আমাদের বহু ছাত্রদলের ছেলেরা প্রাণ দিয়েছে। আমি পঙ্গু হাসপাতালে গিয়েছিলাম তখন ১২৪ জন ছিল। আমি খবর নিয়ে দেখলাম যে, সেখানে ৯০ জন হচ্ছে ছাত্রদলের ছেলে। কিন্তু কখনও সংঘাত সৃষ্টি করা যাবে না। সকলকে এক হয়ে এখন কাজ করতে হবে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এই যে কমিউনালিজমের কথা বলছেন না, সাম্প্রদায়িকতা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার এসব কথা বলছেন না… এটা একটা চক্রান্ত। এই কথা বলে ধুঁয়া তুলে তারা (আওয়ামী লীগ) আরেকটা ঝগড়া করতে চায়। আপনাদের দায়িত্ব নিজ নিজ এলাকায় প্রত্যেক এলাকায় নিজের নিয়ে শান্তি বিগ্রেড তৈরি করেন, শান্তি বিগ্রেড তৈরি করে পাহারা দেবেন। সমস্ত সংখ্যালঘুদের উপাসনালয়, মন্দির, গীর্জা এ সমস্ত পাহারা দেবেন… তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা, তাদের জীবন-মালের দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের।”
‘আমার একজন শিক্ষক ছিলেন ঈমানদার আলেম ছিলেন মাওলানা তমিজ উদ্দিন সাহেব… তিনি বাবরি মসজিদে হামলার সময়ে সকলকে বলেছিলেন, যে দেশে সংখ্যালঘুরা আছে সেখানে সংখ্যাগুরুদের অর্থাৎ আমাদেরকে আমানত পবিত্র আমানত… এই আমানত যে খেয়ানত করে সে আর মোমেন থাকে না… একথাগুলো মাথার ভেতরে সকলকে আনতে হবে এবং তাদের প্রটেকশনের ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে।”
একই সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের নির্দেশ অনুযায়ী ‘প্রেস ও ভালোবাসা নিয়ে দেশকে সামনের দিতে এগিযে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে’ বলে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।