আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাবদ প্রায় ১ দশমিক ১২ বিলিযন ডলার অনুমোদন পাওয়া গেছে। সোমবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে অবস্থিত আইএমএফের সদর দফতরে অনুষ্ঠিত সভার শুরুতে এই ঋণ অনুমোদন করা হয়। বংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রের দফতর থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করছেন দায়িত্বরত নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক।
মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলেরের পক্ষ থেকে দাফতরিকভাবে আমাদের ঋণের তৃতীয় কিস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। আইএমএফ তৃতীয় কিস্তি হিসাবে ১ দশমিক ১১৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদ দিয়েছে। এই অর্থ দুই কর্মদিবসের মধ্যে আমাদের হিসাবে জমা হবে। যা রিজার্ভে যোগ হলে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বেড়ে যাবে।
এর আগে ঋণের তৃতীয় কিস্তি নিয়ে আলোচনা করতে গত ২৩ এপ্রিল ঢাকায় আসে ১০ সদস্যের আইএমএফের প্রতিনিধি দল। ২৫ এপ্রিল বৈঠক হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে। বৈঠকে আর্থিক খাত সংস্কার, খেলাপি ঋণ, সুদের হার বাস্তবায়ন, মুদ্রানীতি, মূল্যস্ফীতি, বিদেশি বাণিজ্যের ভারসাম্য ও আউটলুক, মুদ্রা বাজার ও তারল্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংক্রোচনমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে সুদের হার বৃদ্ধিসহ গৃহীত পদক্ষেপের তথ্য সংগ্রহ করে সংস্থাটি। একইসঙ্গে রিজার্ভ পরিস্থিতি, ডলারের বিদ্যমান রেট, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক লেনদেন বিষয়ে হালনাগাদ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ জানতে চায়।
এছাড়াও ব্যাংক খাতের সংস্কার, একীভুতকরণের পদক্ষেপ, রাজস্ব সংক্রান্ত পরামর্শের অগ্রগতি প্রতিবেদন নিয়েছে আইএমএফ। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য সংস্থার গ্রহিত পদক্ষেপকে যথাযথ বলে জানিয়েছেন উন্নয়ন সহযোগীর সদস্যরা। আইএমএফ ৪৭০ কোটি টাকা ঋণ ছাড়ের শর্ত হিসাবে যেসব সংস্কার প্রস্তাব দেয় তার অধিকাংশই বাস্তবায়ন হয়েছে।
মূলত সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে স্মার্ট পদ্ধতিতে সুদের হার নির্ধারণ, রিজার্ভের লক্ষ্য পূরণ, বাজার ভিত্তিক ডলারের রেট কারা আগে ক্রলিং পেগের মাধ্যমে ডলার লেনদেন, জিডিপির তুলনায় রাজস্ব আদায়ের অনুপাত বৃদ্ধি, ব্যাংক কাতের সংস্কারসহ একীভূতকরণ নীতিমালা এবং বৈদেশিক বাণিজ্যিক লেনদেনসহ সামষ্টিক অর্থনীতির রিভিউ সংক্রান্ত বিষয়াবলির ওপর আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে বাংলাদেশে গৃহীত পদক্ষপে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন আইএমসএফের প্রতিনিধিরা।