আমাদের কেউ আক্রান্ত হলে, জবাব দেয়া হবে: ওবায়দুল কাদের

0
61

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত-সংকটে আমরা ভুক্তভোগী হলে, সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে আমাদের কেউ আক্রান্ত হলে, সেই আক্রমণের জবাব দেয়া হবে। শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেদের এতো খাটো করে দেখবো কেন? আমরাও প্রস্তুত। আক্রমণ করবো না, কিন্তু আক্রান্ত হলে কি ছেড়ে দেবো? আক্রান্ত হলে প্রতিরোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো বৈরিতা নেই। আলাপ-আলোচনার দরজা খোলা আছে। আমরা কথা বলতে পারি। যতক্ষণ কথা বলা যাবে, আলাপ আলোচনা করা যাবে; আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি এবং করে যাবো। আমাদের যেন কোনো উসকানি না থাকে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। আগস্টের ২৫ তারিখ থেকেই রোহিঙ্গাদের যে স্রোত এবং মানবিক কারণে উদারভাবে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। যে কারণে তাকে মানবতার মা বলে অভিহিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ অধিবেশনের পর ওয়াশিংটনে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাসায় ছিলেন। সেসময় ছোট্ট একটা অপারেশন হয়। তিনি প্রতিদিনই সরকার এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট সবাইকে ফোন করতেন। পার্টি পর্যায়েও সাবধান করে দিতেন, কেউ যেন কোনো উসকানি না দেয়। কারণ প্রভোকেশন হলে যুদ্ধ হতে পারে। আমাদের আকাশসীমাও দু’একবার লঙ্ঘন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ধৈর্য ধরেছি। পরে আর সে অবস্থা বেশিদূর এগোয়নি।

তিনি আরও বলেন, তবে রোহিঙ্গা সমস্যা জেকে বসেছে। বিশ্ব প্রশংসা করছে তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য, লিপ সার্ভিস দেয়। কিন্তু এই রোহিঙ্গাদের জন্য যে সাহায্যের পরিমাণ ছিল, সেটি অনেক কমে গেছে। চলমান বিশ্ব সংকটে আমরা নিজেরাই সংকটে আছি। নিজেদেরই দুশ্চিন্তামুক্ত হওয়ার কারণ নেই। সেখানে ১১-১২ লাখ রোহিঙ্গা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে আছে। দুনিয়ার বড় বড় দেশ যারা রোহিঙ্গা নিয়ে কথা বলে, তাদের লিপ সার্ভিসের দরকার নেই।

কাদের বলেন, আমাদের দরকার রোহিঙ্গা চাপ সরিয়ে নেয়া। সার্বিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। শেখ হাসিনা সরকার সব জায়গায় প্রথমে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। এটা দুঃখজনক, জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠান নখদন্তহীনে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েল, বড় বড় দেশ তাদের কথা শোনে না। জাতিসংঘের অনুরোধ উপরোধগুলোর কোনো কার্যকারিতা বাস্তবে দেখতে পারছি না।

এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি কেন আমরাও বলছি দেশে অর্থনৈতিক সংকট আছে। সারা দুনিয়ায় সংকট আছে। আমরা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নই। তবে অনেকের চেয়ে ভালো আছি।

তিনি বলেন, দিবাস্বপ্ন দেখছে বিএনপি। সরকার পরিবর্তন করতে হলে দরকার হয় গণঅভ্যুত্থান অথবা নির্বাচন। নির্বাচন তো ৭ জানুয়ারি হয়ে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই সরকার পতন ঘটবে বিএনপির এমন বক্তব্য হাস্যকর। তাদের নেতাকর্মীরাই এখন আন্দোলনের মানসিকতায় নেই। জনগণ যে আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকবে না, সেটা কোনোদিন গণঅভ্যুত্থান হয় না। ৬৯ এ সবশেষ গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। নব্বইয়ের গণ আন্দোলনে স্বৈরাচার পতন ঘটেছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ডোনাল্ড লু কি বললেন সেটা নিয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। তারা তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো বিষয়ের প্রশংসা, সমালোচনা করেন। আমরা আমাদের নীতি, সংবিধান অনুযায়ী চলবো।

ঈদ উপলক্ষে পশুর হাটের বিষয়ে তিনি বলেন, সড়কের পাশেই পশুর হাট, এটা একটা সমস্যা। রাস্তায় কোনো সমস্যা নেই। এই ঈদ ভিন্ন। পশুবাহী অনেক গাড়ি ধীরগতিতে রাস্তায় চলে। এবার যানবাহনের ভিড় গতবারের চেয়ে অনেক বেশি। স্বাভাবিক কারণেই কিছু জায়গায় কিছু সময়ের জন্য যানজট হয়েছে, অস্বীকার করে লাভ নেই। মানুষের সঙ্গে মিথ্যাচার কেন করবো। তবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ হয়নি। আশা করি, সামনের দিনগুলো ভালো যাবে। আজ এবং কাল ব্যাপকভাবে পোশাক শ্রমিক যাওয়ার কথা। এটা যেকোনো জায়গায় চাপ বাড়াতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here