রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকায় ডিউটিরত অবস্থায় পুলিশ সদস্য মনিরুল হককে গুলি করে হত্যার পর মোবাইলে গান শুনছিলেন কনস্টেবল কাওসার আলী। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে— ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০ গজ দূরে ফুটপাতে বসে গান শুনছিলেন তিনি।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা কাওসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি মুখ খুলছেন না। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তিনি বারবার বলছেন— কাজটি (খুন) ঠিক করেননি। তবে অনুতপ্তও নন। এর মধ্যেই পছন্দের খাবার খেতে চাচ্ছেন কাওসার। পছন্দের খাবার দেওয়াও হচ্ছে তাকে।
এর আগে আজ সোমবার কনস্টেবল মনিরুল হত্যার ঘটনায় তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার রিফাত রহমান শামীমকে আহ্বায়ক করা হয়েছে ওই কমিটিতে। অন্য সদস্যরা হলেন, কূটনৈতিক নিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার এলিন চৌধুরী ও ডিএমপি সদরদফতরের সহকারী কমিশনার আশফাক আহমেদ। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এরও আগে মনিরুল হত্যা মামলায় কাওসার গুলশান থানা পুলিশের কাছে সাত দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, কনস্টেবল মনিরুল ও কাওসার ডিএমপির কূটনৈতিক নিরাপত্তা বিভাগে কর্মরত ছিলেন। গত শনিবার রাতে বারিধারায় ফিলিস্তিন দূতাবাসে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন তারা। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কাওসার পুলিশ বক্সের মধ্যে আর মনিরুল বাইরে ফুটপাতে অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়েছিলেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে বক্স থেকে মনিরুলকে গুলি করেন কাওসার। গুলিবিদ্ধ হয়ে মনিরুল রাস্তায় উপুর হয়ে পড়ে যান।
এরপর কাওসার বক্স থেকে বেরিয়ে ফের গুলি করেন মনিরুলকে। ৩০ রাউন্ড গুলি শেষ হওয়ার পর আরেকটি ম্যাগজিন ঢুকিয়ে গুলি করা হয়। গুলি করার পর কাওসার কখনও ফুটপাতে বসেন, কখনও হেঁটে বেড়ান। এক সময় পা ছড়িয়ে ফুটপাতে বসেন। পাশেই নিজের মোবাইল ফোন রেখে সে সময় গান শুনছিলেন তিনি। এ ঘটনায় নিহত মনিরুলের ভাই পুলিশের কনস্টেবল মাহাবুবুল হক গুলশান থানায় কাওসারের বিরুদ্ধে মামলা করেন।