বিকাল পৌনে ৫টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি নাইটেঙ্গেল মোড় ঘুরে পার্টি অফিস সামনে দিয়ে আরামবাগ হয়ে আবারও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এর আগে ৩টা ৩৫ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে র্যালিপূর্ব সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশের জন্য ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ তৈরী করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই মে দিবসে দেশের সকল মানুষের কাছে আমরা আহ্বান জানাতে চাই, সকল রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন এবং শ্রমিকদের কাছে- আসুন, এখন আর আমাদের চুপ করে বসে থাকলে চলবে না।
আমাদেরকে (সকল রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি) জেগে উঠতে হবে। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আপনার অধিকারকে ফিরে আনার জন্য আন্দোলন ও সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে আনবো। এই হোক আজকের মে দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।
সমগ্র বাংলাদেশে সরকার লুটপাটের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, বিএনপি শুধু নয়, এদেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষ আজকে জেগে উঠছে। আবার জেগে উঠছে। আমরা অতীতেও পরাজিত হই নাই, আমরা পরাজিত হবো না। আমাদের যে লক্ষ্যে, বাংলাদেশে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো এবং ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনবো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দু:খ ও কষ্ট হয় যখন দেখি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার তার বক্তব্যে বলেন যে, কী এমন ঘটলো যে বাংলাদেশে অতি বাম, অতি ডান একসাথে তারা আজকে আমাকে উৎখাত করতে চায়। সমস্যাটা তো ওই জায়গাতেই যে, আপনারা আজকে বুঝতে পারেন না যে, কী ঘটেছে। অথবা বুঝে না বোঝার ভান করেন। আজকে শুধু অতি বাম, অতি ডান নয়- আজকে শুধু মধ্যপন্থী নয়, সব মানুষ, যেকোনো পন্থারই হোক, তারা মনে করেছেন যে, এই তাদের ন্যূনতম অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) আরেকটি কথা বলেছেন, যে আমাদের অপরাধ। আপনাদের অপরাধ। আপনারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আপনারা ধ্বংস করে দিয়েছেন। জননগণের যে ন্যূনতম অধিকার, পাঁচ বছর পর পর তারা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন-সেই অধিকারটুকুও আপনারা কেড়ে নিয়েছেন।
মির্জা আলমগীর বলেন, আমরা এমন একটা সময়ে মে দিবস পালন করছি, যখন সারাদেশ- বিশেষ করে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ তাদের ন্যূনতম অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, এমন সময় মে দিবস পালন করছি যখন সমস্ত দেশটা দৈত্য-দানবের কবলে পড়ে সমস্ত কিছু তছনছ হয়েছে।
ওদিকে সরজমিন দেখা গেছে, বেলা ১২টার পর থেকেই কর্মসূচিতে অংশ নিতে নয়াপল্টনে জড়ো হতে শুরু করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। খণ্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সংগঠনটির হাজার হাজার নেতাকর্মীরা সমাবেশে অংশ নেন। শ্রমিক দলের ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যানার, ফেস্টুন, লাল ও সবুজ পতাকা হাতে নিয়ে স্লোগান দেন তারা। মাথায় লাল ও সবুজ ক্যাপ পরে এবং বাদ্যযন্ত্রসহ নেতাকর্মীরা সমাবেশে অংশ নেন। এসময় তারা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এদিকে কর্মসূচিকে ঘিরে নয়াপল্টনে এলাকায় কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তুলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ১২ দফা দাবি সম্বলিত ঘোষণাপত্র পাঠ করেন শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন। সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানসহ দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।