বিদ্যুতের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে ভোক্তাদের মাসিক খরচ গড়ে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়বে। এর ফলে চাপ পড়বে ভোক্তার ওপর। বুধবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেছে বেসরকারি নীতি-গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার প্রেক্ষিতে ‘সাম্প্রতিক বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি ভর্তুকি সমন্বয়ের অন্য বিকল্প আছে কি’ এ নিয়ে সিপিডির সুনির্দিষ্ট অবস্থান তুলে ধরেন গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভুল নীতির কারণে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে উল্লেখ করে সিপিডি জানায়, উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ কেনার কারণে সরকার তার দায় ভোক্তার ওপর চাপিয়েছে। গ্যাস থেকে এলএনজি বিদ্যুতে যেতে সরকারের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ। এই মূল্যবৃদ্ধি ভোক্তার পর বাড়তি চাপ ফেলবে, যা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এসময় সিপিডির পরিচালিত জরিপের তথ্য তুলে ধরা বলা হয়েছে, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে বাসা বাড়িতে গড়ে বাড়তি বিল দিতে হবে প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ। শীতে গড়ে মানুষকে অতিরিক্ত ১০৬ টাকা আর গরমকালে ১১৮ টাকা বাড়তি বিল দিতে হবে।
নির্বাহী আদেশ নয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের মাধ্যমে গ্যাস বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সিপিডি।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সার্থে গণশুনানির মাধ্যমে দাম বৃদ্ধি বা কমার কাজটি করার দাবি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির। সংস্থাটি বলছে, যে হারে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে তা ভোক্তার সহ্য ক্ষমতার বাইরে। যদিও সরকার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে ভোক্তার ওপর চাপ পড়বে না বলেছে।
এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে পাশ কাটিয়ে শুধুমাত্র নির্বাহী আদেশের ভিত্তিতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে, এতে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করে সিপিড। অনতিবিলম্বে সরকারকে বিদ্যুৎ জ্বালানি অ্যাক্ট এর ওই ধারা রোহিত করে বিইআরসি এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক বিডিং ও গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে সিপিডি।
ক্রমান্বয়ে তেলভিত্তিক কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বের হওয়া, বিদ্যুতের ক্যাপাসিটি বাবদ অর্থ পরিশোধে নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পে ব্যবস্থাসহ ৪ বিকল্প পন্থা জানিয়ে সিপিডি বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন ৩০ শতাংশ বাড়ালেই আর ভর্তুকি দিতে হবে না সরকারকে।