মায়ানমারে স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি (এএ) বনাম মায়ানমার জান্তা সরকারে সেনাবাহিনী ও সীমান্ত রক্ষীবাহিনী মধ্যকার যুদ্ধে গোলাগুলি ও বোমা বিস্ফোরণের শব্দে সীমান্তের এপারে স্থানীয় বাংলাদেশীদের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে।
বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ির ধুমধুম ইউনিয়নের বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত এলাকার নিকটবর্তী মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির রাইট অ্যান্ড লেফট ক্যাম্প নামে দু’টি ক্যাম্প দখলে নিতে টানা চারদিন ধরে চলছে গোলাগুলি।
ওপারের যুদ্ধে ব্যবহৃত গোলাবারুদ, বোমা, মর্টার শেল এপারে স্থানীয়দের বসতভিটা, বাড়ির আঙ্গিনায় এসে আঁছড়ে পড়ে। মর্টার শেল বিস্ফোরিত হয়ে এরই মধ্যে দু’জন নিহত ও এক শিশু আহত হয়েছে। এছাড়া গতকাল ওপার থেকে ছুটে আসা বুলেটের আঘাতে একজন আহত হয়েছেন।
মায়ানমার সীমান্তে দুই গ্রুপে ক্যাম্প দখল নিয়ে তুমুল লড়াইয়ে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি অবনতি ও স্থানীয় জনমানুষের নিরাপত্তাহীনতার কথা মাথায় রেখে বান্দরবান জেলার জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন জরুরি ভিত্তিতে ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে যান। সেখানকার কঠিন পরিস্থিতি ও ভয়াবহতা দেখে সীমান্তে উত্তর ঘুমঘুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জরুরি আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা মোতাবেক ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র স্থানীয়দের আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য কাজ করেছিলেন। সীমান্তবর্তী এলাকার ২৭টি পরিবারের ১২০জন সদস্য আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান ঘুমধুম ইউনিয়নের ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ড সংরক্ষিত মহিলা মহিলা আসনের সদস্য ফাতেমা বেগম। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া সীমান্ত এলাকার ২৭ পরিবারে ১২০ জনের জন্য রাতের খাবার ও কম্বল ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও তিনি আরও জানান।
সকালে ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন জানান রাতে গোলার আওয়াজ শোনা যায়নি। সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।