ঢাকায় রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘হুঁশিয়ারি’, কড়া জবাব দিল যুক্তরাষ্ট্র

0
124

খবর ৭১ ডেস্ক: ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে অবাধ, মুক্ত, সংযুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও স্থিতিস্থাপক দেখার অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র তার এই নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের উদ্দেশ্য এবং অবস্থান এটাই। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা প্রশ্নে তিনি বলেছেন, যেসব সাংবাদিক ও ব্যক্তিত্ব সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে তাদের ওপর বাংলাদেশ সরকারের পদ্ধতিগত ও ব্যাপক নিপীড়নের বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। ব্রিফিংকালে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারি তার কাছে জানতে চান, জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ঠিক পূর্বমুহূর্তে বাংলাদেশ সফর করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। ঢাকায় তিনি বলেছেন, এ অঞ্চলে মার্কিন শাসন ও হস্তক্ষেপ প্রতিষ্ঠার যেকোনো উদ্যোগকে প্রতিরোধ করবে (রাশিয়া)। একইসঙ্গে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিকের নাম করে যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে আসতে চায় এবং এ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। ইন্দো-প্যাসিফিক ট্র্যাটেজি নিয়ে এর জবাবে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, রাশিয়ার প্রতি সম্মান রেখেই আমি বলবো, এটি হলো সেই দেশ- যারা দুটি প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়েছে। আগ্রাসী যুদ্ধ করছে।
স্কুল, হাসপাতাল এবং এপার্টমেন্ট ভবনের ওপর প্রতিদিনই বোমা হামলা করছে। অন্য দেশে চাপিয়ে দেয়া নির্দেশনা নিয়ে তাদের কথা বলা উচিত নয়। মোটামুটিভাবে বলা যায়, সের্গেই ল্যাভরভ যা বলেছেন, তা তিনি সজ্ঞাতে বলেননি।
তার কাছে আবার প্রশ্ন করা হয়- জি-২০তে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে সাইডলাইনে বৈঠক হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ভালো কথোপকথন হয়েছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যদিও আমরা এ বিষয়ে হোয়াইট হাউস অথবা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কোনোরকম বিবৃতি অথবা অন্য কোনোকিছু দেখিনি। জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি মনে করি ওই মিটিং সম্পর্কে প্রকাশ্যে কথা বলেছে হোয়াইট হাউস, বলা হয়েছে অন্য নেতাদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের পাবলিক মিটিং হয়েছে।

ম্যাথিউ মিলারের কাছে আবারও জানতে চাওয়া হয়, দ্রুততার সঙ্গে আমি সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন করতে চাই। বাংলাদেশ সরকার নিয়ন্ত্রিত আদালত দু’জন সিনিয়র সাংবাদিককে সাত বছরের জেল দিয়েছে। তারা হলেন শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমান। এর বাইরে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন নাগরিক এবং একজন সাংবাদিক। ওই সাংবাদিক নিউ ইয়র্কে নির্বাসনে আছেন। কিন্তু তার সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এই সাংবাদিকের নাম ইলিয়াস হোসেন। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? সরকার সাংবাদিক, রিপোর্টার এবং সিনিয়র সম্পাদকদের হয়রানি করছে।

ম্যাথিউ মিলার এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি মনে করি অনেকবার আমরা এ বিষয়ে কথা বলেছি। আমরা বলেছি, যেকোনো গণতন্ত্রের জন্য সাংবাদিকরা অত্যাবশ্যকীয় ভূমিকা পালন করেন। তাদের কাজের মাধ্যমে উন্মোচিত হয় দুর্নীতি, নিশ্চিত হয় সুরক্ষা, যে বিষয়ে জনগণের তথ্য জানার অধিকার আছে। এসব বিষয় জনগণের জীবনমানের ওপর প্রভাব ফেলে। তারা প্রাত্যহিক জীবনে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হন সে সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করেন। তাদের সেই সক্ষমতা থাকা উচিত। আমি এখানে প্রতিদিন যেভাবে আপনাদের কাছে জবাবদিহিতা করি সেইভাবে নির্বাচিত কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা উচিত। হয়রানি, সহিংসতা এবং ভীতির আতঙ্ক ছাড়াই তাদের কাজ করার সক্ষমতা থাকা উচিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here