মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরায় স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রলীগের মধ্যে দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়া অস্ত্রধারী সেই যুবক শাহীন খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাগুরা সদর উপজেলার আলোকদিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর শহরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময়ের ভিডিও ও ছবিতে শহরের কলেজ রোডে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এক যুবককে দেখা যায়। সেই ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ওই যুবককে খুঁজছিলো পুলিশ।
বুধবার স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তিন শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বারিউল ইসলাম ওরফে রিয়াদ।
মামলায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতি সৃষ্টি ও হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ওই মামলায় ১০৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। যার মধ্যে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা ছাড়াও বিএনপির নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। ওই মামলায় প্রথম আসামি হিসেবে শাহীন খানকে গ্রেপ্তার করার কথা জানালো পুলিশ।
ছাত্রলীগ নেতা বারিউল ইসলামের করা ওই মামলায় ৯০ নম্বর আসামি শাহীনের (২৫) বাবার নাম লুৎফর রহমান। তার বাড়ি শহরের স্টেডিয়াম পাড়ায়।
তবে গ্রেপ্তার হওয়া যুবক ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বলে দাবি করেছে বিএনপি। শনিবার দুপুরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মদ ও সদস্যসচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা বিএনপি বলছে, মামলার ৯০ নম্বর আসামি শাহীন খাঁন মাগুরা আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তাকে সেদিন আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে এবং তিনি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেই ছিল।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল মাগুরা আদর্শ কলেজের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি শেখ রেজাউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মীর মেহেদী হাসান। ওই কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নাম ছিল শাহীনের। আদর্শ কলেজের ওই কমিটির সভাপতি নাজমুল হুদা অমি আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জাহিদ হোসেন।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সেদিন শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান, সেই অপকর্ম ঢাকতে আবার বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামেই মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মেহেদী হাসান বলেন, শাহীন নামে ওই যুবক ওই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন কি না এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ওই কমিটি পরবর্তী সময়ে বাতিল করা হয়েছিল। তিনি এখন কী করেন, জানি না।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, অস্ত্রধারী সেই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নাম শাহীন খান। সংঘর্ষের ঘটনায় হওয়া ছাত্রলীগ নেতার করা মামলায় সে আসামি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।