ইউক্রেন সংকট আলোচনায় কারো সঙ্গে আপত্তি নেই পুতিনের: ক্রেমলিন

0
112

খবর৭১: ইউক্রেন সমস্যা সমাধানে কারো সঙ্গে আলোচনা করতে বাধা নেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের, বরং এ সংক্রান্ত আলোচনার ক্ষেত্রে রুশ প্রেসিডেন্ট এখনও মুক্ত মনোভাব পোষণ করেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের মুখপাত্র ও প্রেস সচিব দিমিত্রি পেসকভ শুক্রবার নিয়মিত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।

রুশ বার্তাসংস্থা ইন্টারফ্যাক্সের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষের দিকে আফ্রিকা মহাদেশভুক্ত দেশগুলোর জোট আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতারা রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করতে মস্কো যাবেন।

আফ্রিকার সঙ্গে রাশিয়ার কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ট করা এবং দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুর পাশাপাশি ইউক্রেন যুদ্ধের ইস্যুটিও বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে থাকবে বলে জানা গেছে।

শুক্রবারের ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পেসকভ বলেন, ‘ইউক্রেন ইস্যু সংক্রান্ত যে কোনো আলোচনার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট পুতিন আগেও মুক্ত মনোভাব পোষণ করতেন, এখনও করেন। কেউ এই ইস্যুতে তার সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছে এবং তাতে তিনি আপত্তি জানিয়েছেন— এমন কখনও ঘটেনি।’

‘সুতরাং ইউক্রেন সমস্যার একটি সম্ভাব্য সমাধান বের করতে যে কোনো দেশের সঙ্গেই আলোচনা হতে পারে,’ বলেন পেসকভ।

ইউক্রেনে বসবাসরত রুশ ও ইউক্রেনীয়দের মধ্যকার জাতিগত সংঘাত এবং কিয়েভের যুক্তরাষ্ট্রঘেঁষা নীতির কারণে প্রতিবেশী এ দেশটির সঙ্গে কখনও তেমন সুসম্পর্ক ছিল না রাশিয়ার। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের রুশ বিদ্রোহীদের সহায়তায় ক্রিমিয়া উপদ্বীপ রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়ার পর আরও তিক্ত হয় দু’দেশের সম্পর্ক।’

ক্রিমিয়াকে এখনও রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি ইউক্রেন, বরং রাশিয়ার দখলে উপদ্বীপটি চলে যাওয়ার পর তা ফিরে পেতে ওয়াশিংটন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্টতা আরও বৃদ্ধি করে কিয়েভ। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করে ইউক্রেন।

মস্কোর পক্ষ থেকে এই আবেদন প্রত্যাহারের জন্য আহ্বান জানানো হয় কিয়েভের প্রতি। কিন্তু কিয়েভ তাতে সাড়া না দেওয়ায় দু’দেশের মধ্যে শুরু হয় টানাপোড়েন। প্রায় ৪ বছর এই টানাপোড়েন চলার পর অবশেষে ২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী।

অভিযানের গত দেড় বছরে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন— এই চার প্রদেশ দখল করতে সক্ষম হয় রুশ বাহিনী। এসব প্রদেশের সম্মিলিত আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের ১৫ শতাংশ। গত বছর সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এসব এলাকা রুশ ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করে মস্কো।

এর আগেও মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে শান্তি সংলাপের প্রসঙ্গ বেশ কয়েকবার উঠেছে; কিন্তু কিয়েভ শর্ত দিয়েছে— ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়ার দখলে রয়েছে, সেসব ফিরিয়ে দেওয়া না হলে শান্তি সংলাপে বসা সম্ভব নয় ইউক্রেনের পক্ষে।

অন্যদিকে মস্কোর শর্ত— শান্তি সংলাপে বসার আগে অবশ্যই ক্রিমিয়া, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক এবং খেরসনকে রুশ ভূখণ্ড বলে স্বীকৃতি দিতে হবে কিয়েভকে। তবেই শান্তি সংলাপে বসবে রাশিয়া।

নিজ নিজ শর্তে অনড় অবস্থানের কারণে এই যুদ্ধের সমাপ্তি কবে হবে— তা পুরোপুরি অনিশ্চিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here