খবর ৭১: ঈদ পরবর্তী রাজধানীর বাজারগুলোতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় সবজি ও মাছের দাম চড়া। একই সঙ্গে মাংসের বাজারে ঈদের আগে দাম বাড়াটা ধরে রাখলেও ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে।
তবে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল ও চিনি বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।
রোববার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও তালতলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বাজারগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের পরের দিন ক্রেতা কম থাকায় কাঁচা বাজারের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। অনেক বিক্রেতাই ঈদ করতে বাড়ি চলে গেছেন। কিছু ব্যবসায়ী দোকান খুলেছেন। তবে চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ বাজারগুলো পুরোদমে চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ক্রেতাশূন্য বাজারে পণ্যের সরবরাহ নেই বললেই চলে। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রাজধানীর বড় পাইকারি বাজার কাওরানবাজারেও ঈদের ছুটির আমেজ বিরাজ করছে। বেশির ভাগ পাইকার মোকাম বন্ধ রেখে ছুটি কাটাচ্ছেন। দুই-চার মোকামে যে পণ্য আসছে, দাম চড়া নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, গাড়ি ভাড়াও দ্বিগুণ হয়েছে।
এ ব্যাপারে তালতলা বাজারের সবজি বিক্রেতা আশরাফুল বাংলানিউজকে বলেন, সবজির দাম অনেক চড়া। এছাড়া পণ্য পরিবহনের খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। ঈদের আগে পিকআপ ভ্যান ৩০০ টাকা ভাড়া দিতাম, আজ ৬০০ টাকা দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ শসা ১৬০ টাকা, পেঁপে ৭০, মিষ্টি কুমড়া ৪০, লেবুর হালি ৩০, গাজর ১২০, ঝিঙা ৮০, করলা ৮০, লতি ৮০ ও বেগুন ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা ঈদের আগে এসব সবজি ২০ থেকে ৫০ টাকা কমে বিক্রি করেছি।
বাজারগুলো পুরোদমে চালু না হওয়ায় রাজধানীবাসীকে বেশি দাম দিয়ে সবজিসহ নিত্যপণ্য কিনতে হচ্ছে। এতে ক্রেতাদের কষ্ট বাড়ছে। তবে বেশি দাম দিয়েও ভালো মানের পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
ছুটির দিনে তালতলা বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে এসেছেন হুমায়ুন কবির। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটি থাকায় বাজারের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ রয়েছে। এতে সবজিসহ সব ধরনের পণ্যের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, সরবরাহ কম ও দোকান বন্ধ থাকায় প্রতিকেজি ৮০ টাকার কাঁচামরিচ এখন ১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। শুধু মরিচ কেন বাজারে অন্যান্য সবজির দামও চড়া। কোনো সবজিই ৬০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
চলতি সপ্তাহে দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গরু ও খাসির মাংস আগের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। গরু ৮০০ ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায় ও দেশি মুরগি ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে ঈদ পরবর্তী মাছের দাম বেড়েছে। সব ধরনের মাছ ২০ থেকে ৫০ টাকা কেজি প্রতি বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে ভোক্তাকে।
শেওড়াপাড়া বাজারে মাছ কিনতে আসা নজরুল জানান, ঈদের আগে থেকে মাছের বাজার চড়া। ঈদ পরবর্তী বাজারেও ক্রেতাকে বেশি দাম দিয়ে মাছ কিনতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাজারে মাছই তো নেই। ক্রেতা-বিক্রেতা কম থাকায় কমেছে সরবরাহ। এ সুযোগে বিক্রেতারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
মাছ বিক্রেতারা বলেন, পাইকারি বাজারে মাছের দাম বেড়ে গেছে। বেশি দামে কেনা তাই বেশি দামে বিক্রি করছি।
তবে রাজধানীর বাজারগুলোতে আগের দামে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও আটা বিক্রি হচ্ছে।