অটোবাইক শ্রমিকের সততায় টাকার ব্যাগ ফিরে পেলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা

0
132

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর :
সৈয়দপুরে ব্যাটারিচালিত অটোবাইক শ্রমিকের (চেইনমাস্টার) সততায় গাড়িতে ফেলে যাওয়া টাকার ব্যাগ ফিরে পেলেন কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী। মঙ্গলবার রাতে নীলফামারী জেলা ট্রাফিক বিভাগের শহর ও যানবাহন পরিদর্শক মো. আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরীর মাধ্যমে টাকার ব্যাগটি বুঝিয়ে দেন বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি তামান্না মোড় হাজারীহাট শাখার সভাপতি মঞ্জুর হোসেন সিয়াম ও সাধারন সম্পাদক আরজু রহমানসহ সংগঠনের অন্যান্যরা। ওই ব্যাগে প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে নেওয়া ঋন ও বেতন বোনাসের প্রায় পৌণে ৪ লাখ টাকা ছিল। এসময় টাকা ফেরত পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী। পরে খুশি হয়ে অটোবাইক শ্রমিককে পুরস্কৃত করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী জানান তার বাড়ি সৈয়দপুর উপজেলা শহরের নিয়ামতপুর সরকার পাড়ায়। তিনি কর্মস্থল রৌমারি থেকে সৈয়দপুরে আসেন বেলা পৌণে ৩ টায়। পরে বাসটার্মিনালে নেমে একটি অটোবাইকে চড়ে নিয়ামতপুরের বাসায় আসেন। কিন্তু ভুল করে তার সাথে থাকা টাকার ব্যাগটি অটোবাইকে রেখে বাড়িতে প্রবেশ করেন। কয়েক মিনিট পর তার খেয়াল হয় ব্যাগটি অটোবাইক থেকে নামাননি। সাথে সাথে অটোবাইকের সন্ধানে বের হন। কিন্তু পাননি সেই ব্যাগ। এদিকে ওই অটোবাইক চালক গাড়িতে টাকার ব্যাগ রয়েছে খেয়াল না করে সে অটোবাইক চালিয়ে শহরের দিকে আসতে থাকে। পথিমধ্যে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের মুন্সিপাড়া মোড়ে টাকার ব্যাগটি রাস্তায় পড়ে যায়। এসময় ট্রাফিক বিভাগকে সহায়তা করতে সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে থাকা অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি তামান্না মোড় হাজারীহাট শাখার চেইন মাস্টার মো ছটুর নজরে পড়ে ব্যাগটি। পরে লোকজনের উপস্থিতিতে সেটি খুলে দেখতে পায় ওই ব্যাগে টাকা রয়েছে।
সাথে সাথে সে সংগঠনটির তামান্না মোড় হাজারীহাট শাখার সভাপতি মঞ্জুর হোসেন সিয়াম ও সাধারন সম্পাদক মো. আরজু রহমানকে বিষয়টি জানায়। এমন ঘটনায় তারাও টাকার মালিকের সন্ধান করতে থাকে। এরই মধ্যে টাকার মালিক রৌমারি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী বিষয়টি থানায় অবগত করেন।
পরে বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটি সৈয়দপুর উপজেলা তামান্না মোড় হাজারীহাট শাখার নেতৃবৃন্দ টাকার মালিক কাইয়ুৃম চৌধুরীকে খুঁজে বের করেন। রাতে শহরের বঙ্গবন্ধু চত্বরের ট্রাফিক পুলিশ বক্সে টাকার মালিককে ডেকে আনেন তারা। এসময় নীলফামারী ট্রাফিক বিভাগের শহর ও যানবাহন পরিদর্শক মো. আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরীর মাধ্যমে ব্যাগে থাকা পৌণে ৪ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেন ওই কৃষি কর্মকর্তাকে। এসময় উপস্থিত ছিলেন ওই কর্মকর্তার পিতা মো. আব্দল মজিদ, সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মো. আশরাফ কোরায়শী ছাড়াও বাংলাদেশ অটোবাইক শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সৈয়দপুর তামান মোড় হাজারীহাট শাখার অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। জানতে চাইলে হারিয়ে যাওয়া টাকা ফেরত পাওয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সাংসারিক কাজে প্রয়োজন হওয়ায় প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে ঋণ নেওয়া ৩ লাখ ও বেতন বোনাসের প্রায় ৭৫ হাজার টাকা ছিল ওই ব্যাগে। সবগুলো টাকাই অক্ষত রয়েছে জানিয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এসময় খুশি হয়ে টাকার ব্যাগ পাওয়া ওই অটোবাইক শ্রমিক মো. ছটুকে পুরস্কৃত করেন। এব্যাপারে সংগঠনের সভাপতি মঞ্জুর হোসেন সিয়াম ও সাধারন সম্পাদক মো. আরজু রহমান বলেন,কুড়িয়ে পাওয়া টাকার ব্যাগ প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দিতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। এজন্য তারা তাদের সংগঠনের সদস্য ছটুকেও অভিনন্দন জানান তার সততার জন্য। শহর ও যানবাহন পরিদর্শক মো. আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরী বলেন,অটোবাইক শ্রমিক ছটুর সততা সত্যিই প্রশংসনীয়। এজন্য তাকে আমরা ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। তার এ সততা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here