খবর ৭১: বঙ্গবাজারের মতো এত বড় আগুন নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা দেশের ফায়ার সার্ভিসের নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের এমন কী উন্নয়নমূলক কাজ করছে? যে আজকে একটা আগুন নেভানোর মতো তাদের বিভাগ পর্যন্ত নেই। যেই ফায়ার সার্ভিস আছে, তারা ৪০টির ওপর ইউনিট কাজ করার পরও বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। অর্থাৎ এই ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা নেই এত বড় আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের পৌর মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, সেই অগ্নিকাণ্ডে বঙ্গবাজার পুরোপুরিভাবে ধুলিসাৎ ও মিশে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। এর আগে সিদ্দিক বাজারে ও বনানীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাগুলো কেন ঘটছে? সরকারের যে প্রতিষ্ঠানগুলো দায়িত্বে রয়েছে দেখভাল করার, তারা দেখবে কোথায় আগুন নেভানোর কোনো ব্যবস্থা আছে কি না। কিন্তু আমরা মনে করি সরকারের এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যর্থ হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেই খান্ত হয়নি, তারা অর্থনৈতিক যে ভিত্তিগুলো সেগুলোকে নড়বড়ে করে দিয়েছে। অথচ তারা বলে- বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। এমন উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে এখানে ব্যাংক লোপাট হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাক হয়ে যাচ্ছে। সেগুলোর দিকে আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো খেয়াল নেই।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ একটা অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছে। বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত, মানুষের যে অধিকার তা পুরোপুরিভাবে হরণ করা হয়েছে। লুণ্ঠিত হচ্ছে ব্যক্তিগত অধিকার। সংবিধানকে এখানে প্রতিনিয়ত লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই আওয়ামী লীগ সরকারের এখন সময় হয়ে গেছে চলে যাওয়ার। আমাদের বাংলাদেশকে আবার আগের জায়গায় ফিরে দেওয়া উচিত। কারণ আমরা যে বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, আমরা যে বাংলাদেশকে পেতে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছিলাম, সেই বাংলাদেশ আজকে একটা পুরোপুরিভাবে একক গণতান্ত্রিক, স্বৈরতান্ত্রিক দেশে পরিণত হয়েছে। অথচ আমরা লড়াই করেছি গণতন্ত্রের জন্য। আমরা বিশ্বাস করি দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, দেশের মানুষের আন্দোলন-লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক একটা রাষ্ট্র গঠন করতে সক্ষম হব।
তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন আগামীতে যে সংসদ নির্বাচন, সে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ নতুন করে ২০১৪ ও ২০১৮ এর মতো তামাশা শুরু করেছে। আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই- আমরা তামাশার নির্বাচন বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি জনগণ যেখানে তার সত্যিকারের ভোট দিতে পারবে, তার মত প্রকাশ করতে পারবে, এই ধরনের একটা নির্বাচন আমরা চাই। অবশ্যই সেই নির্বাচনটা যদি আওয়ামী লীগ থাকা অবস্থায় হয়, তাহলে সেই নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে পারে না। শেখ হাসিনা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হননি। তাকে পদত্যাগ করতে হবে, তার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সেই সাথে এই সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে, এটি আমাদের প্রধান দাবি।
আইনজীবী সমিতি নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক একটা ব্যবস্থা আইনজীবী সমিতি। এই সমিতিকে দখল করার জন্য এই আওয়ামী লীগের সরকার বেআইনিভাবে দখল করার জন্য সকল প্রকার শক্তি প্রয়োগ করেছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রযন্ত্রকে তারা ব্যবহার করতে দ্বিধা করছে না। এই একটা জায়গা আইনজীবী সমিতি, যেখানে মানুষের আস্থা ছিল, সেই আস্থাটাও এখন পুরোপুরিভাবে নির্মূল হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমানসহ বিএনপির বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।