খবর ৭১: বঙ্গবন্ধু কাপ আন্তর্জাতিক কাবাডি টুর্নামেন্টে হ্যাটট্রিক ও অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) পল্টনের শহীদ নূর হোসেন জাতীয় ভলিবল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে বাংলাদেশ তিনটি লোনাসহ ৪২-২৮ পয়েন্টে চাইনিজ তাইপেকে পরাজিত করে টানা তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জিতেছে। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ ২০-১৪ পয়েন্টে এগিয়েছিল। ফাইনালসহ বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে ৭টি ম্যাচ খেলে সবকটিই জিতলো।
প্রথম দুই আসরে বাংলাদেশ ফাইনালে হারিয়েছিল কেনিয়াকে। এবারই ছিল প্রথম অল এশিয়া ফাইনাল। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক তুহিন তরফদার টুর্নামেন্টের বেস্ট ক্যাচার ও ম্যান অব দ্য ফাইনাল হন। একই দলের মিজানুর রহমান ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট ও বেস্ট রেইডারের পুরস্কার লাভ করেন।
এই টুর্নামেন্টে ২০২১ এবং ২০২২ সালের ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল কেনিয়া। ওই দুই আসরে কেনিয়াকে যথাক্রমে ৩৪-২৮ এবং ৩৪-৩১ পয়েন্টে হারিয়েছিল লাল-সবুজ বাহিনী।
তৃতীয় আসরের ফাইনালে ওঠাতেই বিশ্বকাপ কাবাডিতে খেলার যোগ্যতা অর্জনের সুখবর পেয়েছিল বাংলাদেশ। আজ বঙ্গবন্ধু কাপ কাবাডির শিরোপা জিতে দেশবাসীর জন্য আরেক সুখবর দেয় সাজুরাম গয়াতের শিষ্যরা।
মঙ্গলবার ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত তুহিন তরফদারদের অকুণ্ঠ সমর্থন জোগাতে স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল দর্শকে পরিপূর্ণ। দু’দলই ধীরস্থির-সতর্ক ভঙ্গিতে শুরু করে। বোনাস পয়েন্ট পাওয়ার মাধ্যমে পয়েন্টের খাতা খোলে বাংলাদেশ। এরপর সংগ্রহ করে আরেকটি পয়েন্ট।
তবে টানা ২ পয়েন্ট পেয়ে দ্রুত সমতায় ফেরে চাইনিজ তাইপে। মিজানুর রহমান রেইড দিয়ে সফল হলে আবারও লিড নেয় স্বাগতিকরা (৩-২)। তবে পিছিয়ে থাকেনি প্রতিপক্ষ তাইপেও। সমানতালে খেলতে থেকে কখনও সমতায় ফেরে, কখনও আবার এগিয়েও যায় তারা (৫-৪)।
একপর্যায়ে ১০-৯ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকার পর ১০-১০ এ সমতা আনে স্বাগতিকরা। এরপরই ১৪ মিনিটের সময় তাইপেকে প্রথমবারের মতো অলআউট করে বাংলাদেশ। ১৪-১০ পয়েন্টে এগিয়ে যায় তারা। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি।
বাংলাদেশ এই ম্যাচে রেইডের চেয়ে সফল ক্যাচারের ভূমিকায়। মূলত তাদের অভিজ্ঞতার কাছেই হার মানে চাইনিজ তাইপে। প্রথমার্ধে ২০-১৪ পয়েন্টে লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ আরও ২২ ও তাইপে ১৪ পয়েন্ট স্কোর করে। তুহিনের রেইডে লোনা ও বোনাস পয়েন্ট মিলিয়ে ৪ পয়েন্ট পেয়ে বাংলাদেশ স্কোরলাইন ২৪-১৪ করে ফেলে।
মিজানুর, আরদুজ্জামান ও তুহিনের একের পর এক সফল রেইড ও দলগত নৈপুণ্যে নিজেদের পয়েন্ট আরও বাড়িয়ে নিতে থাকে লাল-সবুজ বাহিনী। একপর্যায়ে তুহিনের রেইডে তৃতীয় লোনা পেয়ে যায় বাংলাদেশ (৩৭-২১)।
তখনই মোটামুটি বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। ফলে একটু যেন হাল্কা মুডে খেলতে থাকে তারা। এটা কাজে লাগিয়ে তাইপে দ্রুত কিছু পয়েন্ট আদায় করে নেয়।
শেষ আড়াই মিনিট। শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ রেইড দিতে গিয়ে কোনো চাপ নেয়নি। বরং কৌশলগত কারণে ধীরগতিতে খেলে সময় পার করতে থাকে। বাকি সময়ে তাইপে দুটো লোনার পয়েন্ট দিয়েও লিড নিতে পারতো না বা সমতায় ফিরতে পারতো না। তবে তাইপে এই সময়ে কিছু পয়েন্ট আদায় করে।
ম্যাচের শেষ রেইড দেন তুহিন। খেলা শেষ হওয়ার বাঁশি বাজতেই দর্শকদের উল্লাস শুরু হয়। শিরোপা জয়ের আনন্দে তুহিন দর্শনীয়ভাবে ডিগবাজি খান।