উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলে প্রাইমারী স্কুলের কয়েক সহকারী শিক্ষক ক্লাস বাদ দিয়ে স্কুলের গেট বন্ধ করে প্রধান শিক্ষককে স্কুলে প্রবেশ করতে দিলেন না। কয়েক শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের শিশুদের দিয়ে রসুনের খোসা ছাড়ানো, খাবার কেনানো, ডাব-নারকেল পাড়ানো, দেরী করে স্কুলে আসা, ইয়ার ফোন কানে দিয়ে ক্লাস করানো, ক্লাসে ফেসবুক চর্চা, আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায়ের রিপোর্টে, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ নড়াইলের অন্যতম সেরা স্কুল শিবশংকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক সহকারী শিক্ষক ক্লাস বাদ রেখে প্রধান শিক্ষককে স্কুলে প্রবেশ করতে দিলেন না। তারা স্কুলের প্রধান গেটের সামনে দাড়িয়ে প্রধান শিক্ষককে স্কুলে প্রবেশে বাঁধা প্রদান করেন এবং তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। স্কুলের এই বিশৃংখল পরিবেশের কারনে শিশুরা অনেকে ভয় পায় এবং পরে খবর পেয়ে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুল থেকে নিয়ে যায়। বুধবার (৩০ আগষ্ট) স্কুল চলাকালীন সময়ে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানার পর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্কুল পরিদর্শন করেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দু’পক্ষের কাছ থেকে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। অভিযোগে জানা গেছে, গত কয়েকদিন পূর্বে অন্যের সাথে কথা বলার কথা বলে স্কুলের সহকারী শিক্ষক খন্দকার রুমানা পারভিন কেয়া প্রধান শিক্ষক শামীমা ইয়াসমিনের এর মোবাইল নেয়। এ সময় কেয়া অন্য এক সহকারী শিক্ষকের সাথে প্রধান শিক্ষকের বেশ কয়েকটি কথোপকথনের রেকর্ডিং নিজের মোবাইলে নিয়ে নেন। কেয়ার অভিযোগ এসব কথোপকথনে প্রধান শিক্ষক তার (কেয়া) এবং পরিবারকে জড়িয়ে খুবই নোংরা কথা বলেছেন, যা অপরাধের সামিল। এ কারনে তার বিরুদ্ধে এই অবস্থান। এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শামীমা ইয়াসমিন বলেন, স্কুলে কয়েক শিক্ষক ঠিকমতো ক্লাস নেন না। স্কুলের শিশুদের দিয়ে রসুন ছোলায়, বাড়ি ও দোকান থেকে খাবার আনায়, বাড়ির গাছের ডাব-নারকেল পাড়ায়, দেরী করে স্কুলে আসে, কানে ইয়ার ফোন দিয়ে ক্লাস করায়। ক্লাসে ফেসবুক চর্চা করে।শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। আমি এসবের প্রতিবাদ করি। দায়িত্বপূর্ণভাবে স্কুল প্রশাসন চালানোর কারনে কয়েক শিক্ষক আমার ওপর খ্যাপা। গত কয়েকদিন পূর্বে সহকারী শিক্ষক কেয়া অন্যের সাথে কথা বলার অযুহাতে আমার ফোন নিয়ে ব্যক্তিগত বিষয় তার মোবাইলে হস্তান্তর করে, যা অপরাধের সামিল। এখন সে আমাকে স্কুলে ঢুকতে দিচ্ছে না এবং ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। শনিবার কেয়া স্কুলের আয়া দিপালিকে মারধর করে এবং স্কুলের সভাপতির সামনে আমাকে গালাগাল করে। এদিকে স্কুলের অভিভাবক নড়াইল সরকারী ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রভাষক সাজ্জাদ হোসেন তরফদার, লুবনা খানম, খাদিজা খানম, হিমেলা বেগম, রিতা বিশ্বাসসহ অনেকে জানান, প্রধান শিক্ষক ও কয়েক শিক্ষকের আন্তরিক ভূমিকার জন্য এ স্কুলের রেজাল্ট খুবই ভালো এবং ফুটবল খেলায় সারা দেশের মধ্যে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছে। স্কুলের গেট বন্ধ রাখা, চেচামেচি করা, স্কুলের ক্লাস না হওয়া দুঃখজনক। যদি কোনো সমস্যা থাকে সেটা ম্যানেজিং কমিটি বসে সমাধান করতে পারতেন। এই পরিবেশ থাকলে তারা তাদের সন্তানদের অন্য স্কুলে ভর্তি করবেন বলে মন্তব্য করেন। নড়াইল জেলা প্রাইমারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম জানান, প্রধান ফটক বন্ধ করে প্রধান শিক্ষককে প্রবেশে বাঁধা দেওয়া এবং পাঠদান বন্ধ রাখা ঠিক হয়নি। প্রধান শিক্ষকের কথোপকথন এবং সার্বিক ঘটনায় সদর উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদুর করিমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খবর ৭১/ ই;
নড়াইল