খবর ৭১: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ৩ ভাইকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে কাঁচপুর এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-বড় ভাই আসলাম সানি (৪৮), মেঝো ভাই রফিকুল ইসলাম (৩৫) ও ছোট ভাই রনি (২৮)। তারা কাঁচপুরের পাঁচপাড়া এলাকার মৃত সানাউল্লাহ ছানুর ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, কাঁচপুরের পাঁচপাড়া গ্রামের মৃত সানাউল্লার ছেলেদের সঙ্গে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন চাচা মহিউদ্দিনের বিরোধ চলছিল। সম্পত্তি দখল-বেদখল নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে একাধিকবার মারামারি ও মামলা মোকাদ্দমা রয়েছে। রোববার দুপুরে জমির ওপর দিয়ে সরকারিভাবে ড্রেন নির্মাণ কাজ করা হচ্ছিল। এ সময় মৃত সানাউল্লাহর বড় ছেলে আসলাম সানি, মেঝো ছেলে রফিকুল ইসলাম ও ছোট ছেলে মো. রনি ড্রেনের জন্য পাইপ বসাতে শুরু করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন চাচাতো ভাই মোস্তফা, মফিজুল, মারুফ ও মামুন। পরে ড্রেন নির্মাণ কাজে বাধা দেয় তারা। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মহিউদ্দিনের ছেলে মোস্তফা গংরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আসলাম সানি, রফিকুল ও রনিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকে ৩ জনের দেহ। পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় আলবারাকা হাসপাতালে নিয়ে গেলে আসলাম সানি ও মো. রনিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অপরদিকে মেঝো ভাই রফিকুল ইসলাম ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকালে মারা যান।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা আফজাল জানান, সীমানার প্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন ধরে ডেকোরেটর ব্যবসায়ী আসলাম সানি ও তার মেঝো ভাই রফিকুল ও তারই ছোট রনি মিলে সরকারি ড্রেন নির্মাণ কাজ করছিলেন ওই বাড়িতে। এ সময় চাচাতো ভাইয়ের ছেলে মোস্তফা, মামুন ও মফিজুল কাজে বাধা দিয়ে প্রথমে আসলামের ওপর হামলা করে। ভাই আসলামকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন মেঝো ভাই রফিকুল ও ছোট ভাই রনি। এ অবস্থায় হামলাকারীরা তাদেরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় আলবারাকা হাসপাতালে নিয়ে গেলে বড় ভাই আসলাম ও ছোট ভাইকে রনিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। রফিকুলের অবস্থার অবনতি দেখা দিলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপালে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সোনারগাঁ থানার ওসি মাহাবুব আলম জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হামলার ঘটনার পর পর দুই ভাইকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। অপর ভাই রফিকুল ইসলাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। একই পরিবারের ৩ জনকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।