খবর৭১: খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, রমজানে এক কোটি হতদরিদ্র পরিবারকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় চাল সহায়তা দেবে সরকার। প্রতি কেজি চাল ১৫ টাকা করে জনপ্রতি ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা আতপ চাল হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হবে।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রমজানে মানুষ চালের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়বে না। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৪ মার্চ দেশে শুরু হবে মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাস রমজান।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর এ বছর সর্ববৃহৎ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। প্রায় ২ হাজার ৫০০ ডিলারের মাধ্যমে চাল ও আটা বিতরণ হচ্ছে। এ সময় সাধারণত ওপন মার্কেট সেল (ওএমএস) কার্যক্রম বন্ধ থাকে। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্ত হচ্ছে চলতি বছর বারো মাস ওএমএস কার্যক্রম চলমান থাকবে এবং ওএমএসে নিম্ন আয়ের মানুষ ৩০ টাকা কেজিতে চাল ও ২৪ টাকা কেজিতে আটা কিনতে পারবেন।
তিনি বলেন, মার্চ, এপ্রিল, মে এবং সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এ পাঁচ মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলবে। এ সময় প্রতি কেজি ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল পাবেন হতদরিদ্র মানুষ।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আগামী রমজানে মানুষ অন্তত চালের জন্য বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে বলে আমি মনে করি না। পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি খোলা রয়েছে। তবে বর্তমানে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি কম। কারণ দেশেও প্রচুর চালের মজুত আছে। সরকারি গুদামেও মজুত পর্যাপ্ত। স্বাধীনতার পর থেকে সরকারি গুদামে এখন সবচেয়ে বেশি মজুত। ১৫ ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ী, ২০ লাখ ৩৩ হাজার টন সরকারি খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমনে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে পাঁচ লাখ টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত তিন লাখ ৭৪ হাজার ৩০ টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। চার লাখ ৬২ হাজার ৪৭৩ টন চাল কেনার জন্য মিলারদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। আশা করি, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। কৃষক বাজারে ভালো দাম পাচ্ছে, তাই সরকার ধান কিনতে পারছে না বলেও জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশে বৈশ্বিক সংকটের প্রভাব পড়বে না জানিয়ে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমনে আমাদের বাম্পার ফলন হয়েছে। বড় ধরনের দুর্বিপাক না হলে বোরোতেও যদি বাম্পার ফলন হয় তাহলে আমদানির আর প্রয়োজন হবে বলে আমি মনে করি না।
মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। চালের জন্য কোনো হাহাকার নেই। এটাই আমাদের জন্য বড় পাওয়া। বাজারে দাম বাড়লে গরীবের জন্য সরকার আছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, চালের বস্তায় ধানের জাত লেখা বাধ্যতামূলক করতে একটি আইন হচ্ছে। এটি আইন মন্ত্রণালয়ে ভ্যাটিংয়ে আছে। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের বৈঠক আছে। আইন মন্ত্রণালয় ভ্যাটিং করে ছেড়ে দিলেই মন্ত্রিসভার পর পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে উত্থাপন করা হবে।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, কতটুকু ছাঁটাই করা যাবে তাও আইনে থাকবে। খসড়া আইনে অবৈধ মজুতের শাস্তি যাবজ্জীবন। ভ্যাটিংয়ের পর বোঝা যাবে শাস্তি কতটুকু থাকবে।