স্ত্রী ও দুই সন্তান হত্যায় বিটিসিএল কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড

0
195

খবর৭১ঃ

তিন বছর আগে রাজধানীর দক্ষিণখানে স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে খুনের দায়ে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেডের (বিটিসিএল) সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাকিব উদ্দিন আহম্মেদের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে তাকে আরও ৫ মাস বিনাশ্রম কারাভোগের রায়ও দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখারের আদালত এ চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায় দেন।

রায় ঘোষণার আগে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দক্ষিণখানের ৮৩৮ নম্বর ‘প্রেম বাগান’ নামক ভবনের চতুর্থ তলার বাসা থেকে মুন্নী বেগম (৩৭) এবং তার দুই সন্তান ফারহান উদ্দিন (১২) ও লাইবা রহমানের (৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন সকাল থেকেই ওই ভবনের বাসিন্দারা পচা গন্ধ পাচ্ছিলেন। প্রথমে অনেকেই ভেবেছিলেন, হয়ত মৃত পশু-পাখি থেকে গন্ধ আসছে। কিন্তু, আশপাশে খুঁজেও সেরকম কিছু পাওয়া যায়নি। তাই, সন্দেহ বাড়তে থাকে।

এছাড়া, নিহত মুন্নীর ভগ্নিপতি সোহেল আহম্মেদ কয়েকদিন ধরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। এতে সবার সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। ওই দিন সকালে সোহেল আহম্মেদ তাদের খুঁজতে আসেন দক্ষিণখানের ওই বাসায়। এসে ঘরের দরজা বন্ধ পান।

পরে বাড়ির মালিকের সঙ্গে পরামর্শ করে চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। দেখতে পান, মুন্নী বেগম ও তার মেয়ে লাইবার মরদেহ একটি রুমের বিছানার ওপর পড়ে আছে। অন্য কক্ষের মেঝেতে পড়ে আছে ফারহান উদ্দিনের মরদেহ। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে দক্ষিণখান থানা পুলিশ এসে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পরদিন নিহত মুন্নীর ভাই মুন্না রহমান দক্ষিণখান থানায় রাকিব উদ্দিন আহম্মেদকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার বছরখানেক পর ২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাকিবকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিমানবন্দর জোনাল টিমের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মিজানুর রহমান।

চার্জশিটে ওই নির্মম হত্যাকাণ্ডের একটি চিত্র উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, ছেলে ফারহান উদ্দিন বিপ্লব অন্য রুমে ঘুমাচ্ছিল। বাবা রাকিব জুতার ফিতা দিয়ে ছেলের গলা পেঁচানোর সময় ছেলে ঘুম থেকে জেগে ওঠে। অনেক হাউমাউ করে কাঁদে। ছেলেটি বলে, ‘বাবা, তুমি কি আমাকে মেরে ফেলবে?’ তারপর জোর করে ছেলেটির গলায় রশি পেঁচিয়ে ধরে। ক্রমেই নিস্তেজ হয়ে যায় ছেলেটি।

মামলার বিচার চলাকালে আদালতে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here