কাজী শাহ্ আলম
লালমনিরহাট প্রতিনিধি: দুই বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর এবারে কালী পূজা উপলক্ষে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা এলাকার সীমান্তে চোঁখের জলে পূর্ন হলো দুই বাংলার মিলন মেলা। আইনের জটিলতা দিয়ে যেন এ মিলন মেলা বন্ধ না হয় আবেদন সকলের।
দুই বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের মেচেরঘাট সীমান্তে কালী পুজা উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে দুই বাংলার এ মিলন মেলা বসে। সকাল ৭ টার দিকে শুরু হওয়া এ মিলন মেলা চলে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত। শত শত মানুষ সীমান্তে ছুটে এসেছে রক্তের টানে। কাছের লোকজনদের দেখতে পেয়ে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তবে অনেকই প্রাণের টানে ছুটে এলেও আত্মীয়দের দেখা না পেয়ে মন খারাপ করেও চোঁখের জল মুছতে মুছতে ফিরে গেছেন। আবার অনেকেই স্বজনদের সাথে স্মৃতি টুকো ধরে রাখতে তুলছেন সেলফি, ছবি।
দীপালী রানী (৫৪)। বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর এলাকায়। মঙ্গলবার ভোর রাতে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের মেচেরঘাট সীমান্তে এসে বসে আছে। কালী পূজা উপলক্ষে দুই বাংলার লোকজনের দেখার করার সুযোগ দিবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গুনছেন অপেক্ষার প্রহর,কখন শেষ হবে রাত। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তার খালাতো বোনের ছেলে জয়ধর বাবুর সাথে দেখা হয়। দেখা হলেও ভাগিনাকে ধরিয়ে ধরে আদর করেতে পারেনি দীপালী রানী। কারণ বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে দুই বাংলার সীমান্তে কাটাতারের বেড়া। ভাতিজার সাথে দেখা করে ফেরার পথে দীপালী রানী জানান, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় তার খালা-খালু ভারতে চলে যায়। সেই সময় ছোট খালা দুইবোনের সাথে শেষ দেখা হয়। কয়েক বছর আগেও এক বার খালাতো বোনের সাথে দেখা হয়ে ছিলো দীপালী রানী। কিন্তু গত বছর তার সেই খালাতো বোন মারা গেলেও যেতে পারে নাই । আজ তার ভাগিনাদের কাছে পেলেও ধরিয়ে ধরতে পারে নাই।
মিলন মেলায় আসা সফিকুল ইসলাম, রবিন্দ্র নাথ জানান, বছরে একটা দিন আমরা কালী পূজা উপলক্ষে আমাদের আপন জনের দেখা করার সুযোগ পায়। সে যেন অব্যাহত থাকে। আইনের জটিলতা দিয়ে যেন এ মিলন মেলা বন্ধ না হয়। তারা আরো বলেন বছরে এমন একটি মিলনমেলা আমাদের মানবিক পৃথিবী তৈরীতে ভুমিকা রাখবে।
পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রবিউল হক মিরন বলেন, এ সীমান্তে প্রতিবছর কালী পূজা উপলক্ষে দুই বাংলার মিলন মেলা বসে। এতে অনেকেই তাদের পুরাতন আতানীয় স্বজনের দেখা করতে পেয়ে বেশি খুশি মনে বাড়ি ফিরেন। এটা অব্যাহত থাকা প্রয়োজন।