খবর৭১ঃ নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকার ২৩ শতাংশ মানুষ উচ্চরক্তচাপে ভুগছে। একইসঙ্গে এসব এলাকার আরও ১৪ শতাংশ মানুষ ভবিষ্যতে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিতে রয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ ও সাউথ এশিয়া ফিল্ড এপিডেমিওলোজি অ্যান্ড টেকনোলজি নেটওয়ার্ক (সেফটিনেট) বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ‘বাংলাদেশের নগর স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উচ্চরক্তচাপ ও স্থূলতার ঝুঁকি’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে এ তথ্য উঠে আসে।
গবেষণা ফলাফল প্রকাশ ও চার সিটি করপোরেশনের যে জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গবেষণা-ফেলোশিপে কাজ করেছেন, তাদের সার্টিফিকেট প্রদান উপলক্ষ্যে ঢাকার র্যাডিসন হোটেলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের নগর জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত এই গবেষণায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষের উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতা নির্ণয় ও ঝুঁকি যাচাই করা হয়।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে উচ্চরক্তচাপে ভোগার হার তুলনামূলকভাবে বেশি। পাশাপাশি ৩৬ শতাংশ মানুষ স্থূলতার ঝুঁকিতে রয়েছে। চার সিটি করপোরেশনের মধ্যে রংপুরের মানুষদের মধ্যে উচ্চরক্তচাপের রোগীর হার সবচেয়ে বেশি (৩৪%) এবং কুমিল্লার মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে কম। অন্যদিকে উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকিতে থাকা মানুষের হার সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায় (২৩%) এবং সবচেয়ে কম ময়মনসিংহে (৬%)। খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, উচ্চরক্তচাপের পারিবারিক ইতিহাস এবং সংযোগ ইত্যাদিকে উচ্চরক্তচাপের কারণ হিসেবে দেখা গেছে গবেষণায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) ডা. মো. নাসির উদ্দিন এমপি। তিনি বলেন, ‘আরবান হেলথে কাজ করা খুব সহজ বিষয় নয়। এ ধরনের উন্নতমানের গবেষণা আরও বেশি দরকার, যেন কোন জায়গাতে কাজ করতে হবে সেটা নিশ্চিতভাবে জানা যায়। আর সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শহরকে বসবাসযোগ্য যেমন করতে হবে, নগরবাসীর স্বাস্থ্যের খেয়ালও রাখতে হবে।’
গবেষণার ফলাফল প্রকাশের পর এই প্রকল্পের আওতায় এক বছরব্যাপী আয়োজিত ‘এপ্লাইড এপিডেমিওলোজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ ম্যানেজমেন্ট ফেলোশিপ কোর্স’–এর সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের হেলথ অফিসার ও সেভ দ্য চিলড্রেনের নিয়োগকৃত ১৫ জন জনস্বাস্থ্য রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা এই ফেলোশিপ কোর্সে অংশগ্রহণ করেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল ও প্রিভেনশনের (ইউএস সিডিসি) অর্থায়নে পরিচালিত ‘বাংলাদেশের নগর জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প’ দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে। উচ্চরক্তচাপ ও স্থূলতা শনাক্তকরণের পাশাপাশি শিশুদের অপুষ্টি যাচাই, গৃহস্থালী বর্জ্য পৃথকীকরণ, মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়ন, ডেঙ্গি বিস্তার রোধের মতো বিভিন্ন বিষয়ে দেশের অন্যান্য সিটি করপোরেশনে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক ক্যাম্পেইন পরিচালিত হয়।