খবর৭১ঃ দুই বছরের বেশি সময় পর ওয়ানডে একাদশে সুযোগ পেয়েই ক্যারিয়ার সেরা পাঁচ উইকেট নিলেন তাইজুল ইসলাম। যাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আটকে যায় দুইশর আগেই। পরে গুদাকেশ মোতির স্পিনে চাপে পড়লেও তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের দারুণ শুরুর পর নুরুল হাসান সোহানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে জিতেই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।
রোববার (১৭ জুলাই) গায়ানায় তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয়টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪ উইকেটে জিতেছে তামিম ইকবালের দল। সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচও জিতেছিল বাংলাদেশ। এ নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা ১১ ওয়ানাডে জিতল টাইগাররা।
প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বোলিং করতে নেমে ক্যারিবিয়ানদের আজ ১৭৮ রানেই আটকে রাখে বাংলাদেশ। পরে ৯ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেছেন সফরকারীরা।
১৭৮ রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ শুরুতেই অবশ্য ধাক্কা খায়। ওপেনিং করতে নামা তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরেছেন মাত্র ১ রান করে। তবে দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ইকবাল ও তিনে নামা লিটন দাস ৫০ রানের জুটি গড়ে সেই ধাক্কা সামলেছেন। গুদাকেশ মোতিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টাইমিং গড়বড় করে তামিম ৫২ বলে ৩৪ রান করে ফিরলে এই জুটি ভাঙে।
এরপর মোতি ২০ রানের ব্যবধানে লিটন, আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মোসাদ্দেক হোসেনকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে বেশ ভালোই চাপে ফেলেন। ৬৫ বলে ৫টি চার ১টি ছয়ে ঠিক ৫০ রান করে ফেরেন লিটন। আফিফ রানের খাতাই খুলতে পারেননি। মোসাদ্দেক করেন ১৫ রান। বাংলাদেশ পঞ্চম উইকেট হারিয়ে ফেলে ১১৬ রানে।
তবে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ, নুরুল হাসান সোহানরা বিপদ কাটিয়ে বাংলাদেশকে ঠিকই জয় এনে দিয়েছেন। মাহমুদউল্লাহ অবশ্য কাজ শেষ করে আসতে পারেননি। ৬১ বলে ২৬ রান করে আউট হয়েছেন দলীয় ১৪৭ রানের মাথায়। বাকি কাজটা দারুণভাবে সেরেছেন সোহান-মিরাজ।
সপ্তম উইকেটে দুজনের জুটি ছিল অপরাজিত ৩২ রানের। সোহান ৩৮ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ৩২ রান করে অপরাজিত থাকেন। মিরাজ ৩৫ বলে ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে গুদাকেশ মোতি ১০ ওভার বোলিং করে ২৩ রান খরচায় তুলে নেন ৪ উইকেট।
এর আগে ক্যারিবিয়ানদের দুইশর আগেই গুটিয়ে যাওয়াতে বড় অবদান তাইজুল ইসলামের। বাড়তি একজন স্পিনারের প্রয়োজনে তরুণ পেসার শরিফুল ইসলামকে বসিয়ে অভিজ্ঞ স্পিনার তাইজুল ইসলামকে একাদশে ডেকেছিল বাংলাদেশ। টেস্ট দলে মোটামুটি নিয়মিত হলেও ওয়ানডে খুব একটা খেলার সুযোগ হয় না তাইজুলের। সাকিব আল হাসানের উপস্থিতি, মেহেদি হাসান মিরাজের কার্যকর হয়ে উঠার পাশাপাশি নাসুম আহমেদদের আগমন তাইজুলকে আরও অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিচ্ছিল।
বাড়তি একজন স্পিনারের প্রয়োজন মনে না করলে আজও হয়তো বেঞ্চে বসেই কাটাতে হতো তাইজুলকে। তবে যেভাবেই হোক সুযোগ যখন পেলেন তখন দুর্দান্তভাবেই কাজে লাগালেন অভিজ্ঞ স্পিনার। নিজের কোটার পুরো ১০ ওভার জুড়েই কাঁপিয়েছেন প্রতিপক্ষকে। তার টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে বারবার পরাস্ত হয়েছেন ডানহাতি ব্যাটাররা। ১০ ওভারে দুই মেডেনে মাত্র ২৮ রান খরচ করে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন তাইজুল।
দারুণ বোলিং করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদরাও। মোস্তাফিজ ১০ ওভারে ২৪ রানে ও নাসুম আহমেদ ৩৯ রান খরচায় দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। যাতে ৪৮.৪ ওভারে ১৭৮ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে তাইজুল ইসলামের হাতেই। আর তিন ম্যাচেই বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেওয়া ও দুর্দান্ত অধিনায়কত্ব করা তামিম ইকবালের হাতে উঠেছে সিরিজ সেরার পুরস্কার।