খবর৭১ঃ করোনা মহামারির থাবা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝেও ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৫ হাজার ২০৮ কোটি ২৬ লাখ (৫২.০৮ বিলিয়ন) ডলার রপ্তানি আয়ের মাইলফলক অর্জন করেছে বাংলাদেশ। যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি। এর আগে কখনই এক অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি থেকে এত বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে আসেনি।
রবিবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়ের এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, এর আগের বছর রপ্তানি আয় ছিল ৩৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়েছে, যা ৪৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন নির্ধারণ করা হয়েছিল।
ইপিবির তথ্য বলছে, গত অর্থবছরের ১২ মাসে বাংলাদেশ থেকে পাঁচ হাজার ২০৮ কোটি ২৬ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ এগিয়ে এবং আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি।
এর আগে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সর্বসাকুল্যে তিন হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানির ওপর ভিত্তি করে পরের বছরের জন্য চার হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল।
একক মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এসেছিল গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ৪৯০ কোটি ৭৭ লাখ (৪.৯০ বিলিয়ন) ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এসেছিল চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ৪৮৫ কোটি ৩ লাখ ৭০ হাজার (৪.৮৫ বিলিয়ন) ডলার। মার্চে এসেছিল ৪৭৬ কোটি ২২ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারিতে এসেছিল ৪২৯ কোটি ৪৫ লাখ (৪.২৯ বিলিয়ন) ডলার। রপ্তানি আয়ে সবচেয়ে বেশি গার্মেন্টস সেক্টর ২০২২ অর্থবছরে ৪২.৬১ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এ খাতে আয় বেড়েছে ৩৫.৪৭ শতাংশ, যা ২০২১ অর্থবছরেও ৩১.৪৫ বিলিয়ন ডলার ছিল।
দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্প-মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ চেম্বারের বর্তমান সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ‘মে মাসে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমায় দেশের অর্থনীতিবিদ-রপ্তানিকারকদের মধ্যে অনেকেই হতাশ হয়েছিলেন। তারা বলতে শুরু করেছিলেন, এই তো রপ্তানি কমা শুরু হলো। কিন্তু আমি ওই সময় বলেছিলাম ভিন্ন কথা। আমি বলেছিলাম মে মাসে রোজার ঈদের কারণে ৮/১০ দিন সব পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল; চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমও বন্ধ ছিল। সেই কয়দিন আসলে কোনো রপ্তানি হয়নি। সে কারণেই মে মাসে রপ্তানি কম হয়েছিল। জুন মাসে ঠিকই আবার বেড়েছে। শুধু বাড়েনি। এক মাসের হিসাবে রেকর্ড হয়েছে। যুদ্ধের মধ্যেও এই উল্লম্ফন আমাদের সাহস জুগিয়েছে। আশা করছি এই ইতিবাচক ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।’