খবর৭১ঃ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশের সাফল্য ঈর্ষণীয়।
শুক্রবার (১ জুলাই) গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার ষষ্ঠ বার্ষিকী উপলক্ষে দীপ্ত শপথ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
হলি আর্টিজান হামলায় তৎকালীন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রবিউল ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন নিহত হন। তাদের স্মরণে গুলশান মডেল থানার সামনে দীপ্ত শপথ নামে এ দুই অফিসারের ভাস্কর্য বানানো হয়। প্রতি বছর হলি আর্টিজানের হামলার বার্ষিকীতে দীপ্ত শপথ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় তাদের স্মরণে।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আজ থেকে ৬ বছর আগে ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই হলি আর্টিজানে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে এতে ৩ বাংলাদেশীসহ ২০ জন নিহত হন। যারা মারা গিয়েছেন আমরা তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা ও আত্মার শান্তি কামনা করছি। ওই সময় দুজন পুলিশ অফিসার বীরত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, র্যাব সব সময় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে দৃঢ়ভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান কর্নেল আজাদ সিলেটে জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযানে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হন। আমি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।
র্যাব ডিজি বলেন, হলি আর্টিজান ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে আমরা ওই এলাকা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনি। অভিযান পরিচালনা করার মতো একটি পরিবেশ সৃষ্টি করি। হলি আর্টিজানের ঘটনা যেদিন সংঘটিত হয় সেদিন জঙ্গিরা অনলাইনে লাইভ করেছিল। তাদেরকেও আমরা চিহ্নিত করেছি ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।
তিনি বলেন, র্যাব আজ পর্যন্ত ৩ হাজার জঙ্গি গ্রেপ্তার করেছে। হলি আর্টিজানের পর আমরা ১ হাজার ৫০০ এর বেশি জঙ্গি গ্রেপ্তার করেছি। গ্রেপ্তার জঙ্গিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মূল পরিকল্পনাকারী আমির সারোয়ার জাহান, অর্থায়ন ও পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত শরিফুল ইসলাম খালেক ও মামনুর রশিদ রিপন।
র্যাব ডিজি বলেন, বিভিন্ন বাহিনী ও আমরা এক সঙ্গে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করি। সরকার ঘোষিত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অংশ হিসেবে আমরা সমন্বিতভাবে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ও আস্তানা ভেঙ্গে দিয়েছি।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ ঈর্ষনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা যেভাবে জঙ্গিবাদ দমন করেছি সেই ধারাবাহিকতা ধরেও রেখেছি। সাইবার জগতে আমরা জঙ্গি কার্যক্রমের বিষয়ে নজরদারি রাখছি। জঙ্গিবাদ দমনে সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এক সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি। যার কারণে জঙ্গিবাদ এখন তাদের সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারছে না। তার পরেও আমরা কিন্তু আত্মতুষ্টিতে ভুগেছি না, সব সময় সতর্ক আছি।
র্যাব ডিজি বলেন, আমরা ১৬ জন জঙ্গিকে আত্মসমর্পণ করিয়েছি। তাদের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি, যাতে করে তারা আবার জঙ্গিবাদে জড়িয়ে না পড়ে। কেউ যদি জঙ্গিবাদের পথ ছেড়ে ভালো পথে আসতে চায় এবং কোনো অপরাধে এখনো জড়িত হয়নি তাদেরকে ভালো পথে, শান্তির পথে আসার জন্য আমরা উদ্বুদ্ধ করি।