খবর৭১ঃ;কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম বলতে আমরা আসলে কি বুঝি? আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারণা জিমে গিয়ে কঠিন কোনো শারীরিক কসরত করাই হলো ব্যায়াম। কিন্তু হাল্কা হাঁটাচলা করা, সাইকেল চালান, সাঁতার কাটা এমনকি ঘরের কাজ করাও ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রমের অন্তর্ভুক্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সপ্তাহে ৭৫ মিনিট থেকে ১৫০ মিনিট শারীরিক পরিশ্রম করা অপরিহার্য। ব্যস্ত এ জীবনে প্রতিদিন সম্ভব না হলেও সপ্তাহে ৫ দিন কায়িক পরিশ্রমের জন্য ৩০ মিনিট সময় বরাদ্দ রাখা দরকার।
মানবদেহ একটি অতি জটিল প্রকৃতির যন্ত্রের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। যন্ত্রকে অনেকদিন ব্যবহার না করে ফেলে রাখলে যেমন অকেজো হয়ে যায় ঠিক তেমনি আমাদের শরীর ও মন নিয়মিত কায়িক পরিশ্রমের অভাবে ঠিকভাবে বিকশিত হতে পারে না। নিয়মিত ব্যায়াম আমাদের মাংসপেশি, হার্ট ও ফুসফুসের ফিটনেস ধরে রাখতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হার্টের বিভিন্ন রোগ এমনকি কিছু ক্যানসার থেকেও (ব্রেস্ট ক্যানসার, কোলন ক্যানসার) আমাদের রক্ষা করতে পারে বলে মনে করা হয়। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক মানুষই নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতী, নতুন মা-মোটকথা সব ধরনের মানুষেরই ব্যায়াম করার প্রয়োজন আছে। তবে শারীরিক অসুস্থতা এবং বিশেষ ক্ষেত্রে (গর্ভবতী, শিশু, বৃদ্ধ) অবশ্যই হেলথ প্রফেশনালের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ব্যায়ামের সময়সীমা ঠিক করে নেওয়া উচিত। গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে নিয়মিত ব্যায়াম প্রিএক্লাম্পসিয়া, খিঁচুনি, প্রেগন্যান্সি ডায়াবেটিসসহ ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
মানসিক বিকাশে কায়িক পরিশ্রমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে আমাদের সেরোটোনিন, স্ট্রেস হরমোন এবং এন্ডরফিন নামক কিছু হরমোনে পরিবর্তন আসে যা আমাদের মানসিক অবসাদ কাটাতে এবং ভালো ঘুমে সাহায্য করে। এতে করে আমাদের কর্মস্পৃহা এবং নিজের প্রতি বিশ্বাস অনেকটা বেড়ে যায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত ব্যায়াম আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করে। আজকাল ছোট বাচ্চাদের হাতে স্মার্ট ফোন চলে যাওয়াতে খেলাধুলার প্রতি বাচ্চারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। অথচ নিয়মিত খেলাধুলা করলে তাদের শারীরিক বৃদ্ধি ও হাড়ের গঠন দ্রুত হবে। শুধু তাই নয়, স্কুল পারফরমেন্স ও মানসিক বিকাশেও এর ভূমিকা রয়েছে।