খবর৭১ঃ
‘টোল আরোপের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর খরচ তুলে আনা হবে। শুধু খরচ নয়, আশা করছি এই বিনিয়োগের বিপরীতে মুনাফাও করা হবে। তবে এখন পর্যন্ত টোল হার নির্ধারণ করা হয়নি।’
বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক বিষয়ক ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সব দেশই এ ধরনের বড় বিনিয়োগের টাকা টোলের মাধ্যমে তুলে আনা হয়। আমরা আশাবাদী, সেতু নির্মাণের শেষ দিন পর্যন্ত যে খরচ হবে, সবটুকু টোলের মাধ্যমে আদায় করা হবে। বরং খরচের চেয়ে বেশি অর্জন হবে। না হলে এগিয়ে যাওয়া যাবে না। আর এই টোলের অর্থ দিয়ে সেতুর পরবর্তী সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ ও নতুন প্রকল্পে ব্যয় করা হবে। এটি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হবে না।’
কবে নাগাদ পদ্মা সেতু চালু হবে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করছি, এ বছরের শেষ নাগাদ চালু করতে পারব। তবে কিছু সমস্যা বলেকয়ে আসে না। প্রত্যাশা করছি- একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব। কিন্তু অনিবার্য কারণে দেখা গেছে, আরও সময় লেগে যেতে পারে। এ ছাড়া বর্তমান ইউক্রেন ও রাশিয়া যুদ্ধের কারণে কার্যকর প্রতিশ্রুতি কেউই দিতে পারছে না।’
টোল আদায়ের মাধ্যমে কত বছরে পুরো খরচ তুলে আনা সম্ভব জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো নিয়ে বিস্তারিত এখনো কাজ হয়নি।’
শ্রীলংকার বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটের মতো পরিস্থিতি আমাদের দেশে হওয়ার আশংকা করছেন কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘একটি দেশের বিপদের মূল কারণ জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) চেয়ে ঋণের অঙ্ক বেশি হলে। কিন্তু বাংলাদেশের ঋণের অঙ্ক এখনো জিডিপির মাত্র ৩৪ শতাংশের সমান। পৃথিবীর অনেক দেশের তুলনায় এই হার কম। এখনো গোটা বিশ্ব বলছে, বাংলাদেশ অনেক শক্তিশালী অবস্থানে আছে। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির কোনো সূচক এমন পর্যায়ে নেই, যা আগামীতে খারাপ পরিস্থিতির ইঙ্গিত বহন করে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয় ভালো অবস্থানে আছে। টাকার কোনো অবমূল্যায়ন করা হয়নি। আগামীতে দেশ আরও ভালো অবস্থানে যাবে। শ্রীলংকার মতো পরিস্থিতি বাংলাদেশে হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
অর্থনৈতিক বিষয় এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পৃথক সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী। সেখানে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে ১টি এবং ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে ১০টিসহ মোট ১১টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৮০৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন ৯৮০ কোটি টাকা। বাকি অর্থ দেশীয় ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে।