মিরসরাইয়ে ২ বছরেও হয়নি গৃহবধূ মুন্নী হত্যার রহস্য উদঘাটন

0
285

রেদোয়ান হোসেন জনি, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

মিরসরাইয়ে আলোচিত গৃহবধূ মুন্নী হত্যার ২ বছরেও হয়নি রহস্য উদঘাটন।
২০২০ সালের ৫ এপ্রিল (রবিবার) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম অলিনগর গ্রামের সওদাগর বাড়িতে গৃহবধূ কুলছুমা আক্তার মুন্নী’র নির্মম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। সে ঐ বাড়ির কাতার প্রবাসী আক্তার হোসেন প্রকাশ মুক্তার এর স্ত্রী।

তারপর একের পরে এক নাটকীয়তা, রহস্য উদঘাটনে গড়িমসি, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রকাশে বিলম্ব, মিথ্যা সাক্ষী দেওয়া, হয়নি কোন বিচার, হয়নি কোন সুরাহা, হয়নি এখনো কোন আসামি গ্রেফতার। ভিকটিম এর পরিবারের কাছে দীর্ঘ ৮ মাস পরে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ করা হলেও চার্জশিট থেকে প্রকৃত আসামিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগ উঠেছে।
এখনো থামেনি একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে মায়ের আহাজারি, ভাইয়ের আর্তনাদ, নিষ্পাপ সন্তানের কান্না ও হাহাকার।
এই নিয়ে ভিকটিম এর পরিবারের মধ্যে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। এই রহস্য জনক মৃত্যু নিয়ে ধূম্রজাল এর সৃষ্টি হয়েছে।

২০২০ সালের ৬ এপ্রিল উক্ত ঘটনায় নিহতের বড় ভাই ফিরোজ আহমেদ বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় নিহতের স্বামী আক্তার, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি, ২ ঝা ও ভাসুর সহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৩০৬ ধারায় মামলা নং-৭/(৪)২০২০ দায়ের করেন, যেটার জি.আর মামলা নং-৭/৬৮। ঐসময় জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে ছিলেন ওসি মফিজুর রহমান এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন উপপরিদর্শক (এসআই) নিবাস ভট্টাচার্য।
দীর্ঘ ৬ মাস পরে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ করা হলে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের উপর নারাজি দিয়ে একই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে উক্ত মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তে স্থানান্তর করা হলে ঘটনার ১০ মাস পরে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী উক্ত ঘটনা তদন্তের নিমিত্তে পিবিআই এর টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। যার দায়িত্বে ছিলেন পিবিআই এর পুলিশ পরিদর্শক আক্তার হোসেন।
প্রায় ১০ মাস তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর পিবিআই চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
পিবিআই তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে নারাজি দিলে ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষী নিহতের শিশু সন্তান আরাফাত হোসেন মাহিনের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারী চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে উক্ত মামলা পুনরায় (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট) সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নিহতের বড়ভাই সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অলিনগর তারকা ক্রিড়া সংঘের সাধারণ সম্পাদক মাস্টার ফিরোজ আহম্মদ জানান, ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল একমাত্র বোন কুলছুমা আক্তার মুন্নীকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন নির্মমভাবে খুন করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে রাখে। এভাবেই দুই বছর পার হয়ে গেলো। আমি চাই আমার বোনের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হোক। ইন্ধনদাতা, প্রকৃত দোষী ও অপরাধীরা কেউ যেন কোনভাবেই পার ও ছাড় না পায় এবং আমার বোনের মতো কারো পরিবারে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে রহস্য উদঘাটন করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতি অনুরোধ জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here