আবারও বাড়লো এলপিজির দাম। বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত ১২ কেজির এলপিজির সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে ৪৮ টাকা। এছাড়া ভোক্তা পর্যায়ে মুসকসহ অটোগ্যাসের মূল্য ৬৭ দশমিক ০২ টাকা সমন্বয় করা হয়েছে। এ নিয়ে পর পর তিন মাসে প্রায় তিনশ টাকা বেড়েছে এলপিজির দাম।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে দফায় দফায় বাড়ছে এলপিজির দাম। এরই প্রেক্ষিতে রবিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নতুন এই দাম ঘোষণা করে।
নতুন নির্ধারিত মূলে প্রতি কেজি এলপিজির দাম ১১৬ টাকা ৮৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১৯ টাকা ৯৪ পয়সা করা হয়েছে। এতে করে প্রতি ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৩৯১ টাকা থেকে ৪৮ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ৪৩৯ টাকা করা হয়েছে। সাড়ে ১২ কেজি ১৪৯৯ টাকা, ১৫ কেজি ১৭৯৯ টাকা, ১৬ কেজি ১৯১৯ টাকা, ১৮ কেজি ২১৫৯ টাকা, ২০ কেজি ২৩৯৯ টাকা, ২২ কেজি ২৬৩৯ টাকা, ২৫ কেজি ২৯৯৮ টাকা, ৩০ কেজি ৩৫৯৮ টাকা, ৩৩ কেজি ৩৯৫৮ টাকা, ৩৫ কেজি ৪১৯৭ টাকা এবং ৪৫ কেজির সিলিন্ডার বিক্রি হবে ৫ হাজার ৩৯৭ টাকা।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাসাবাড়িতে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত (রেটিকুলেটেড) এলপিজির দামও বাড়ানো হয়েছে। প্রতি কেজি ১১২ টাকা ৬৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১৬ টাকা ৭০ পয়সা করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে পরিবহনে ব্যবহৃত অটোগ্যাসের দামও। এপ্রিলের জন্য অটোগ্যাসের দাম প্রতি লিটার ৬৪ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬৭ টাকা ২ পয়সা হয়েছে। লিটারে বেড়েছে প্রায় ২ টাকা ২৪ পয়সা। সাড়ে ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৪৫ কেজি পর্যন্ত সব সিলিন্ডারের দামই বাড়ানো হয়েছে।
বিইআরসি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাম ঘোষণা করা হয়। নতুন নির্ধারিত দাম রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হবে। সংবাদ সম্মেলনে কমিশন চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, সচিব আবু সায়িদ, সদস্য মকবুল ই ইলাহি উপস্থিত ছিলেন।
বিইআরসি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এবং মূসকের হার বেড়ে যাওয়ায় এলপিজির দাম বেড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সৌদি সিপি অনুসারে ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম বেড়েছে। প্রোপেন ও বিউটেনের দাম প্রতি টন যথাক্রমে ৮৯৫ থেকে বেড়ে ৯৪০ এবং ৯২০ থেকে বেড়ে ৯৬০ ডলারে উঠেছে। প্রোপেন ও বিউটেনের মিশ্রণ অনুপাত ৩৫:৬৫ বিবেচনায় এপ্রিলের জন্য এই নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গেল মার্চে প্রতি ১২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ২৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৩৯০ টাকা দশমিক ৫৬ পয়সা করা হয়। ফেব্রুয়ারিতেও প্রতি কেজি এলপিজি ৯৮ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১০৩ টাকা ৩৪ পয়সা করেছিল কমিশন। ওই সময় ১২ কেজির দাম ১ হাজার ১৭৮ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ২৪০ টাকা করা হয়।
প্রসঙ্গত, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। এর প্রভাবে জ্বালানি তেল, এলএনজি ও এলপিজির দাম বেড়েই যাচ্ছে। সেটারই প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারে।