খবর৭১ঃ বান্দরবানের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো হয়ে গেলো বক্সিং প্রতিযোগিতা একটি সমৃদ্ধশালী জাতি গঠনে ক্রীড়ার ভূমিকা অনন্য।সুতরাং আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে সমৃদ্ধশালী জাতি গঠনে ক্রীড়া একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।যে জাতি যত বেশি ক্রীড়া প্রেমী হয় সেই জাতি ততবেশি শিক্ষিত এবং ততবেশি উন্নত হয়।উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় যে দেশগুলো যতবেশি উন্নত তাদের খেলাধুলার মানটাও ততবেশি উন্নত হয়।খেলাধুলার সাথে সংশ্লিষ্টরা মানসিকভাবে দৃঢ় শক্তির হয় এবং তাদের আচার ব্যবহারও মার্জিত হয়।গত বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠে অনুষ্ঠিত বান্দরবান বক্সিং ক্লাব আয়োজিত “ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে বক্সিং চ্যাম্পিয়নশীপ-২২ টুর্নামেন্টের” সমাপনী এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে এমন কথাই বলেন বান্দরবান সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.জিয়াউল হক,এনডিসি এএফডব্লিউসি পিএসসি।এসময় বান্দরবান বক্সিং ক্লাবের এই আয়োজনকে স্বাগত জানিয়ে তিনি আরও বলেন,সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ জীবনের প্রথম ইভেন্ট বক্সিং।বক্সিং কতটা কঠিন এবং কঠোর একটি খেলা আমরা তা উপলব্ধি করি।বক্সিং এমন একটি খেলা যেখানে কেউ কাউকে ছাড় দেয় না।এই খেলায় জয় পেতে সবাই দৃঢ় মানসিক শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণ করে।ভবিষ্যৎ এ বান্দরবানে যাতে আরও বড় পরিসরে এই ধরনের বক্সিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যায় এবং বান্দরবানের বক্সিংকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্য নিয়ে আমি জোন কমান্ডারকে দিকনির্দেশনা দিয়েছি।এসময় তিনি,রিজিয়ন এবং জোনের সাথে সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ রাখতে বান্দরবানে বক্সিং সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবানও জানান।বান্দরবানের বক্সিং কে এগিয়ে নিতে যেকোনও ধরনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদানে রিজিয়ন সর্বদা প্রস্তুত বলেও তিনি উল্লেখ করেন।আগামীতে আরও সুন্দরভাবে বান্দরবান জেলায় এই ধরনের বক্সিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হউক দৃঢ় কন্ঠে এই আহবান জানিয়ে তিনি আরও বলেন,বান্দরবানের বক্সিং খেলোয়াড়রা শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের মানচিত্র এবং লাল সবুজের জাতীয় পতাকা উড্ডয়ন করুক এমন প্রত্যাশাই ব্যাক্ত করছি।এতো সুন্দর একটি আয়োজনে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য সর্বোপরি এতো সুশৃঙ্খল সুন্দর একটি আয়োজনের আয়োজক সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান বক্সিং ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাহফুজুর রশীদ বাচ্চুু।বান্দরবান বক্সিং ক্লাবের ম্যানেজমেন্ট এন্ড কমিউনিকেশন ডিরেক্টর লুৎফুর রহমান (উজ্জ্বল) এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৫ইবি বান্দরবান জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল মাহমুদুল হাসান পিএসসি,বান্দরবানের পৌর মেয়র মো.ইসলাম বেবী,জিটুআই-(ইন্টঃ) ক্যাপ্টেন নাঈম পারভেজ,ক্যাপ্টেন মিসবাহুল ইসলাম ফুয়াদ (৫ ইবি),৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো.ওমর ফারুক প্রমুখ।খেলায় সর্বমোট ৯টি বাউটে (প্রতিটি বাউটে ১২ মিনিট) ১৮ জন বক্সার অংশগ্রহণ করেন।বান্দরবান বক্সিং ক্লাবের আমন্ত্রণে এই খেলায় রাঙামাটি,খাগড়াছড়ি এবং চট্টগ্রাম থেকে ১২ জন বক্সার অংশগ্রহণ করেন।এর আগে একইদিন, বিকেল ৫টায় বান্দরবানের পুলিশ সুপার জেরিন আখতার,বিপিএম এর পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.নাজিম উদ্দিন উদ্বোধনী বাউটে উপস্থিত ছিলেন।তিং তিং মে (ওমেন-৬৬ কেজি) এবং লুবায়েত লুবু (মেন-৩২ কেজি) কে টুর্নামেন্টের শাইনিং বক্সার হিসেবে নির্বাচিত করেন চট্টগ্রাম থেকে আগত সিনিয়র বক্সার ও এই টুর্নামেন্টের প্রধান নির্বাচক মো.ফরহাদ হোসেন এর নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের বিচারক প্যানেল।রিং রেফারি হিসেবে খেলায় দায়িত্ব পালন করেন মো.ইলিয়াস।খেলায় অংশগ্রহণকারী সব খেলোয়াড়কে প্রশংসা পত্র এবং ৯ বিজয়ীকে রংধনু ম্যাডেল তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.জিয়াউল হক,এনডিসি এএফডব্লিউসি পিএসসি।পাশাপাশি অনুষ্ঠানের শুরুতেই বান্দরবান বক্সিং ক্লাবের কোচ ও খেলোয়াড়রা সকল অতিথি কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নেন।পরে বক্সিং ক্লাবের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথিকে সম্মাননা স্বারক তুলে দেন টুর্নামেন্টের সার্বিক তত্ত্বাবধয়ক ও বান্দরবান বক্সিং ক্লাবের ম্যানেজমেন্ট এন্ড কমিউনিকেশন ডিরেক্টর লুৎফুর রহমান (উজ্জ্বল)।এসময় বান্দরবান বক্সিং ক্লাবকে দশ হাজার টাকার একটি শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি।প্রসঙ্গত,জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো একটি উন্মুক্ত মাঠে “ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে বক্সিং চ্যাম্পিয়নশীপ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে বান্দরবান বক্সিং ক্লাব।এদিন বিকেল থেকেই হাজারো দর্শকের পদচারণায় মুখরিত হয় ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠ।