শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : বেনাপোলে দু’পক্ষের কলহের গোলকধাঁধায় শশী ভূষণ(৬৫) নামে একজন মারাগেছে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত বেনাপোল বাজারে সুনামের সহিত সেলুনের কাজ করতেন। নিহত শশী’র অনাকাঙ্খিত এই মৃত্যুটি হত্যা নাকি স্ট্রোকজনিত তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। পুলিশ বলেছেন লাশ ময়না তদন্ত শেষে বলা যাবে হত্যা নাকি স্ট্রোকজনিত মুত্যু।
শুক্রবার দুপুরে বেনাপোল পোর্ট থানার পোড়াবাড়ী নারায়নপুর গ্রামে কলহে কথাকাটি ও মারামারির একপর্যায়ে অনাকাঙ্খিত এই মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার এক ঘন্টার মধ্যে পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছেন।
আটককৃতরা হলো- বেনাপোল পোর্ট থানার পোড়াবাড়ি নারায়নপুর গ্রামের মৃত সুধীর চন্দ্রর ছেলে বিনয়, বিনয়ের ছেলে শুভঙ্কর, কেরামত আলীর ছেলে আব্বাস ও আব্বাসের ছেলে বাবু।
নিহতের ভাই রশী ভূষণ জানান, শুক্রবার দুপুরে তাদের ঘরের পাশ থেকে মাটিকাটা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় প্রতিবেশী বিনয় আর গোসাই বুড়ির। পর্যায়ক্রমে দুই বাড়ির মহিলারা একত্রিত হয়ে চুল ছেড়াছিড়ি করে । একপর্যায়ে নিহত শশীর ছেলে বিপ্লব মাঠ থেকে আসার পথে চুল ছেড়াছিড়ি থামিয়ে দেয়। এসময় বিনয়ের ছেলে শুভঙ্কর ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বিপ্লবকে মারধর করে। যা মেটাতে তিনি রশীসহ শশী ও দিলীপ সেখানে যায়। এসময় আবারও কথা কাটাকাটি হয় এবং একপর্যায়ে ঠেলাঠেলি ও মারামারির সৃষ্টি হয়। হঠাৎ শশী ভূষণ মাটিতে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়েগেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার দুপুরে সামান্য মাটিকাটার বিষয় নিয়ে সংখালঘু দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মারামারি বাঁধে। পরে স্থানীয়রা ঠেকাতে এলে ঠেলাঠেলির একপর্যায়ে শশী ভূষণ মাটিতে পড়ে যায়। পরে মারামারির দৃশ্য দেখে তিনি স্ট্রোক করে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তিনি ইতিপূর্বেও দুইবার স্ট্রোক করেছিলেন বলে জানান স্থানীয়রা।
নিহতের ভাইপো এ্যাডভোকেট তপন কুমার বলেন, তার পরিবারের সদস্যদের মারধরসহ তার চাচাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এঘটনায় পুলিশের আটককৃত ৪ জনসহ ৫ জনকে আসামী করে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
কথা হয় বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল ভুঁইয়া সাথে। তিনি মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করে জানান, বেনাপোলের পোড়াবাড়ি নারায়নপুর গ্রামে দু’পক্ষের কলহের সময় শশী ভূষণ নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে। ময়না তদন্ত শেষে বলা যাবে হত্যা নাকি স্ট্রোকজনিত মুত্যু। এঘটনায় নিহতের পরিবারের দাবি শশী ভূষণকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের বর্ণণা মোতাবেক সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যদের নিয়ে অভিযোগকৃতদের মধ্য থেকে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলাসহ মারামারি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত হত্যা নাকি স্ট্রোকজনিত মৃত্যু তা নিয়ে সংশয় চলছিলো পুলিশ ও জনমনে। অবশেষে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আটককৃত ৪ জনসহ ৫ জনকে আসামী করে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছিলো।