খবর৭১ঃ ক্যান্সারের মধ্যে পাকস্থলীর ক্যান্সার সবচেয়ে জটিল। এই ক্যান্সার হলে রোগীকে প্রচণ্ড কষ্ট করতে হয়। কিছু উপসর্গ ও লক্ষণ দেখে পাকস্থলীর রোগ শনাক্ত করা হয়। সে সম্পর্কে সবার ধারণা থাকা উচিত।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন ইডেন মাল্টিকেয়ার হাসপাতালের বৃহদন্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক।
পাকস্থলীর ক্যান্সারে মৃত্যুঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। প্রতি বছর বহু লোক এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন।
রোগটি প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা গেলে এবং অপারেশনের মাধ্যমে ক্যান্সার আক্রান্ত স্থান কেটে ফেলে দিলে রোগী সুস্থ হয়ে যেতে পারেন।
লক্ষণ
রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে হজমক্রিয়ার গোলযোগ দেখা দেয়। খাদ্যগ্রহণের পর পেটে অস্বস্তি অনুভুতি হয়। সমস্যাগুলোকে রোগী তেমন গুরুত্ব দেন না। রোগী মনে করেন গ্যাস্ট্রিক হয়েছে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে সাময়িক আরাম অনুভব করেন। ফলে ক্যান্সার পাকস্থলী থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পায়।
রোগটি ছড়িয়ে পড়লে যে উপসর্গ দেখা দেয়-
* পেট ফেঁপে ও ফুলে থাকে
* বমি হয়
* খাদ্যগ্রহণের পর খাদ্যনালীতে ব্যথা হয়
* অল্প খেলে তৃপ্তি চলে আসে
* রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়
* শরীরের ওজন কমে যায়
* বমির সঙ্গে রক্ত কিংবা কালো পায়খানা হতে পারে
এ সমস্যাগুলো হলে অপারেশন করালেও রোগীর আয়ুকাল খুব বেশি বাড়ানো যায় না। সাধারণত চল্লিশোর্ধ্ব বয়সে এ ক্যান্সার বেশি হয়ে থাকে। নারীদের চেয়ে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হন।
কেন পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়
যে কারণে পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-
* প্রচুর মাদক গ্রহণ
* হেলিকোব্যাকটর পাইলোরি নামক এক প্রকার জীবাণুর আক্রমণ
* অত্যধিক লবণ আছে এমন খাবার গ্রহণ করা
* সংরক্ষিত টিনজাত খাবার
* অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অভাব রয়েছে এমন খাবার গ্রহণ করা
* যারা ধূমপায়ী এবং ধুলাবালি স্থানে বাস করে তাদের মধ্যেও এ ক্যান্সার হতে পারে
* বংশগত কারণেও পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়
কী করবেন
এক সময়ে জাপানে পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণে অনেক লোক মারা যেত। বর্তমানে চল্লিশোর্ধ্ব বয়সের পর যাদের হজমক্রিয়ার গোলযোগ হচ্ছে তাদের এন্ডোস্কোপি করে প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় করে অপারেশনের মাধ্যমে ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়।
আমাদের দেশে রোগীরা যখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হন তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ক্যান্সার পাকস্থলীর বাইরে ছড়িয়ে পড়ে, এরফলে চিকিৎসা করা দুরূহ হয়ে পড়ে। এ জন্য উপরের সমস্যাগুলো দেখা দেয়া মাত্রই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।