খবর৭১ঃ
এবার লাদাখ সীমান্তের কাছে সেতু নির্মাণ করছে চীন। একে কেন্দ্র করে আবারও ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি পূর্ব লাদাখে প্যাংগং লেকের ওপর সেতু নির্মাণের একটি স্যাটেলাইটের ছবি প্রকাশ করা হয়। এতে চীনা সেনাবাহিনীকে সেতু নির্মাণ করতে দেখা যায়।
ভারতের কূটনৈতিক মহল বলছে, নতুন এই সেতু লেকের দুই পাড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি চীনের প্রভাব বিস্তার করবে।
পহেলা জানুয়ারি একটি ভিডিও প্রকাশ করে চীনের রেড আর্মি। যেখানে লাদাখের গালওয়ান ভ্যালিতে পতাকা উত্তোলন করতে দেখা যায় চীনা সেনাদের।
রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায় ওই ভিডিও। এ নিয়ে সরব হয়ে ওঠে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার নতুন খবর সামনে এলো।
পূর্ব লাদাখের প্যাংগং লেকের ওপর সেতু নির্মাণের ছবি প্রকাশ করেছেন ভারতের কূটনীতি বিশেষজ্ঞ ডেমিয়েন সাইমন। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে দেখা দেয়, চীনা সেনাদের নির্মাণ করা এই সেতু এরই মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার পথে।
সেতুটি সম্পন্ন হলে প্যাংগং লেকের উত্তর এবং দক্ষিণ তীরকে সংযুক্ত করবে। নতুন এই সেতু লেকের দুই পাড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি চীনের প্রভাব বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, নিজের এলাকাতেই চীন ওই সেতু নির্মাণ করছে বলে জানা গেলেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা ওই সেতুর দূরত্ব মাত্র কয়েক মিটার।
সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হলে ভারতের বিরুদ্ধে সেনা এবং যুদ্ধসরঞ্জাম জড়ো করতে চীন আরও সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে যাবে। একই সঙ্গে প্যাংগংয়ের দুই তীরেই তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পথ আরও প্রশস্ত হবে।
২০২০ সাল থেকে পূর্ব লাদাখে ভারত এবং চীনের ৫০ হাজার করে সেনা মোতায়েন রয়েছে। দেপসাং, দেমচকসহ একাধিক জায়গায় কার্যত মুখোমুখি অবস্থানে দুই পক্ষ। সেনা তুলে নিতে দফায় দফায় আলোচনাও হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। কিন্তু তাতেও বরফ গলেনি। বরং বিগত কয়েক মাস ধরে অরুণাচলপ্রদেশেও চীনা আগ্রাসন দেখা গিয়েছে। সেখানের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে একাধিক গ্রাম গড়ে তোলা হয়েছে বলে চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নয়াদিল্লির।
২০২০ সালের মে মাসে সামরিক অচলাবস্থা শুরু হওয়ার পর থেকে ভারত ও চীন বিদ্যমান অবকাঠামো উন্নত করতে কাজ করে চলেছে। একইসঙ্গে সীমান্তের ওপারে বেশ কয়েকটি নতুন রাস্তা, সেতু, ল্যান্ডিং স্ট্রিপও তৈরি করেছে তারা। প্যাংগং তসো হ্রদটি ১৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ।
এটির দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশি চীনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। খুরনাক ফোর্টে যেখানে চীন সেতু নির্মাণ করছে, সেটির অবস্থান বুমেরাং আকৃতির হ্রদটির মাঝামাঝি পয়েন্টে।
সেনা সূত্র জানায়, নতুন সেতুটি এই অঞ্চলে চীনের সৈন্যদের দ্রুত সংগঠিত করতে সহায়তা করবে। দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে অচলাবস্থা শুরু হওয়ার পর থেকে চীন
এই অঞ্চল জুড়ে অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে-রাস্তা প্রশস্তকরণ, নতুন রাস্তা ও সেতু নির্মাণ, নতুন ঘাঁটি, এয়ার স্ট্রিপ, উন্নত অবতরণ ঘাঁটি ইত্যাদি।