খবর৭১ঃ করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে এটি শনাক্ত হলেও যাতে বিস্তার লাভ না করে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আজকের বৈঠকে ওমিক্রন নিয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় বারবার রিকোয়েস্ট করেছেন। উই হ্যাভ টু বি ভেরি ভেরি কেয়ারফুল। সাউথ আফ্রিকা থেকে আমরা প্রোটোকল নিয়েছি। তারা বলেছে এটা খুব দ্রুত বিস্তার লাভ করে।’
টিকার বুস্টার ডোজের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটা ওয়ার্ল্ডওয়াইড স্প্রেড করে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীরা বুস্টার ডোজের জন্য রিকমেন্ড করেছে। আমাদের দেশেও কীভাবে বুস্টার ডোজ দেওয়া যায় সেটা চিন্তাভাবনা চলছে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন।’
সচিব বলেন, ‘যদিও এর ভয়াবহতা ডেল্টা ভেরিয়েন্টের মতো নয়। বুস্টার ডোজ কবে দিলে ভালো হয় সেটা নিয়ে কাজ করতে বলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তবে এখনও দিন তারিখ ঠিক হয়নি।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা খুব ভাগ্যবান যে, দুজন ওমিক্রনে শনাক্ত হয়েছেন, দুজনই হচ্ছেন ক্রিকেট বোর্ডের। ক্রিকেট বোর্ডের একটা সুবিধা আছে, তাদের সাথে সোনারগাঁও হোটেলের একটা এগ্রিমেন্ট আছে। সোনারগাঁও হোটেলের ফ্লোরের একটা উইং পুরোপুরি বায়ো বাবল হিসেবে রেখে দিয়েছে। সেজন্য যেসব খেলোয়াড় বাইরে থেকে আসে তারা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বায়ো বাবলে ঢুকে যায়, সেখানে টেস্ট হয়। লাকিলি সবার মধ্যে দুজনের ধরা পড়েছে, তারা ফ্যামিলি বা কারো সংস্পর্শে আসার কোনো সুযোগ পায়নি। বিমানবন্দর থেকে বায়ো বাবলের মধ্যে চলে গেছে। এটা একটা সুবিধা হয়েছে।’
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যেহেতু আমেরিকা থেকে এসেছি, ফ্রান্সেও আমাকে বুস্টার ডোজের কথা বলেছে। আমি বলছি, এটা আমি দেশে গিয়ে দেখব। এ বিষয়েও কারিগরি কমিটি ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে রেডি থাকে, বুস্টার ডোজ ফ্রি নাকি ফি দিয়ে দেয়া হবে- এ জিনিসগুলো ওনারা আলোচনা করে একটা নীতিমালা ঠিক করবেন।’ গত ২৫ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরা ওমিক্রন নামের একটি নতুন কোভিড-১৯ ধরন শনাক্ত করেন, যা একাধিক মিউটেশনে হয়েছে। ২৬ নভেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা করেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় সম্প্রতি আবিষ্কৃত কোভিড-১৯ এর প্রথম শনাক্ত বি.১.১.৫২৯ স্ট্রেন কোভিডের একটি উদ্বেগজনক ধরন হতে পারে।
যদিও প্রথমে যে বিপজ্জনক মনে করা হচ্ছিল ধরনটিকে, এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে সেটা তত ভয়ংকর নয়। ইতিমধ্যে বিশ্বের ৬০টির বেশি দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়লেও এই ধরনে আক্রান্ত কেউ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওমিক্রন ধারণার চেয়ে বেশি গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে, তবে এটি ডেল্টার মতো এতটা প্রাণঘাতী নয়।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশে জিম্বাবুয়ে ফেরত দুই নারী ক্রিকেটারের ওমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যদিও দুইজনের শরীরে ওমিক্রন ধরা পড়েছে। তবে ভালো খবর হলো, এই ভ্যারিয়েন্টে বিশ্বে এখনো কেউ মারা যায়নি এবং এতে (ওমিক্রন) মৃত্যুর হার কম। কিন্তু করোনার এই ভ্যারিয়েন্টটি ছড়ায় বেশি, তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’